পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

←8Ꮼ রবীন্দ্র-রচনাবলী যায়। এ নগরে যদি চেষ্টা করি তাহলে বালক বলে ছোটো জাত বলে সকলে আমাকে খুব কম দাম দেবে। সন্ন্যাসী । না বাবা, তোমার মূল্য এখানে কেউ বুঝবে না। আমি ভাবছি কি যিনি তোমার প্রভুকে অত্যন্ত আদর করতেন সেই বিজয়াদিত্য বলে রাজাটার কাছে , গেলে কেমন হয় ? উপনন্দ । বিজয়াদিত্য ? তিনি যে আমাদের সম্রাট । সন্ন্যাসী। তাই না কি ? উপনন্দ । তুমি জান না বুঝি ? 艦 সন্ন্যাসী। তা হবে । না হয় তাই হল । উপনন্দ । আমার মতো ছেলেকে তিনি কি দাম দিয়ে কিনবেন ? সন্ন্যাসী । বাবা, বিনামূল্যে কেনবার মতো ক্ষমতা তার যদি থাকে তাহলে বিনামূল্যেই কিনবেন । কিন্তু তোমার ঋণটুকু শোধ করে না দিতে পারলে তার এত ঋণ জমবে ষে র্তার রাজভাণ্ডার লজ্জিত হবে, এ আমি তোমাকে সত্যই বলছি । উপনন্দ । ঠাকুর এও কি সম্ভব ? সন্ন্যাসী । বাবা, জগতে কেবল কি এক লক্ষেশ্বরই সম্ভব, তার চেয়ে বড়ো সম্ভাবনা কি আর কিছুই নেই ? উপনন্দ । আচ্ছ, যদি সে সম্ভব হয় তো হবে, কিন্তু আমি ততদিন পুথিগুলি নকল করে কিছু কিছু শোধ করতে থাকি—নইলে আমার মনে বড়ো গ্লানি হচ্ছে। সন্ন্যাসী । ঠিক কথা বলেছ বাবা । বোঝা মাথায় তুলে নাও, কারও প্রত্যাশায় ফেলে রেখে সময় বইয়ে দিয়ে না । উপনন্দ । তাহলে চললেম ঠাকুর । তোমার কথা শুনে আমি মনে কত ষে বল পেয়েছি সে আমি বলে উঠতে পারি নে । [ প্রস্থান লক্ষেশ্বরের প্রবেশ লক্ষেশ্বর । ঠাকুর, অনেক ভেবে দেখলেম—পারব না। তোমার চেলা হওয়া আমার কর্ম নয়। যা পেয়েছি তা অনেক দুঃখে পেয়েছি, তোমার এক কথায় সব ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে শেষকালে হায় হায় করে মরব। আমার বেশি আশায় কাজ নেই। সন্ন্যাসী। সে-কথাটা বুঝলেই হল। লক্ষেশ্বর । ঠাকুর, এবার একটুখানি উঠতে হচ্ছে । সন্ন্যাসী। ( উঠিয়া ) তাহলে তোমার কাছ থেকে দুটি পাওয়া গেল।