পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૬૨ রবীন্দ্র-রচনাবলী ভূষণ কবি, কৈবত্তর পো, লেখে ভালো, কিন্তু দীক্ষা দিতে এলে তার ঘরে আগুন লাগিয়ে দিতুম না। প্রথম ব্যক্তি। তবে যে আমাদের কে একজন বললে কোথাকার কোন একজন স্বামী এসেছে। * I | সন্ন্যাসী । যদি-বা এসে থাকে তাকে দিয়ে তোমাদের কোনো কাজ হবে না । দ্বিতীয় ব্যক্তি । কেন ? সে ভণ্ড না কি ? সন্ন্যাসী । তা নয় তো কী ? তৃতীয় ব্যক্তি। বাবা, তোমার চেহারাটি কিন্তু ভালো। তুমি মন্ত্রতন্ত্র কিছু শিখেছ । সন্ন্যাসী । শেখবার ইচ্ছা তো আছে কিন্তু শেখায় কে ? তৃতীয় ব্যক্তি। একটি লোক আছে বাবা-সে থাকে ভৈরবপুরে, লোকটা বেতালসিদ্ধ। একটি লোকের ছেলে মারা যাচ্ছিল, তার বাপ এসে ধরে পড়তেই লোকট করলে কী, সেই ছেলেটার প্রাণপুরুষকে একটা নেকড়ে বাঘের মধ্যে চালান করে দিলে। বললে বিশ্বাস করবে না, ছেলেটা ম’লো বটে কিন্তু নেকড়েটা আজও দিব্যি বেঁচে আছে। না, হাসছ কী, আমার সম্বন্ধী স্বচক্ষে দেখে এসেছে। সেই নেকড়েটাকে মারতে গেলে বাপ লাঠি হাতে ছুটে আসে। তাকে দুবেলা ছাগল খাইয়ে লোকট ফতুর হয়ে গেল। বিদ্যে যদি শিখতে চাও তো সেই সন্ন্যাসীর কাছে যাও। প্রথম ব্যক্তি। ওরে চল রে বেলা হয়ে গেল। সন্ন্যাসী ফন্ন্যাসি সব মিথ্যে । সে-কথা আমি তো তখনই বলেছিলেম । আজকালকার দিনে কি আর সে-রকম যোগবল আছে । দ্বিতীয় ব্যক্তি। সে তো সত্যি। কিন্তু আমাকে যে কালুর মা বললে তার ভাগনে নিজের চক্ষে দেখে এসেছে সন্ন্যাসী একটান গাজা টেনে কলকেট। যেমনি উপুড় করলে অমনি তার মধ্যে থেকে এক ভাড় মদ আর একটা আস্ত মড়ার মাথার খুলি বেরিয়ে পড়ল । তৃতীয় ব্যক্তি । বল কী, নিজের চক্ষে দেখেছে ? দ্বিতীয় ব্যক্তি। ই রে, নিজের চক্ষে বই কি । তৃতীয় ব্যক্তি। আছে রে আছে, সিদ্ধপুরুষ আছে ; ভাগ্যে যদি থাকে তবে তো দর্শন পাব। তা চল না ভাই, কোনদিকে গেল একবার দেখে আসি গে। [ প্রস্থান লক্ষেশ্বরের প্রবেশ লক্ষেশ্বর। দেখে ঠাকুর, তোমার মন্তর যদি ফিরিয়ে না নাও তো ভালো হবে না বলছি। কী মুশকিলেই ফেলেছ, আমার হিসাবের খাতা মাটি হয়ে গেল। একবার