পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. রবীন্দ্র-রচনাবলী “করি । অনেক মানুষ আছে যাদের স্বভাবে দু-রকম বুনোনির কাজ। দুটোর মধ্যে মিল নেই। অথচ দুটোই সত্য। তারা নিজেকেও নিজে ভুল করে।” عیي ভারি গলায় আওয়াজ এল, “কী হে ভায়া ।” “কানাই বুঝি ? এস এস।” t কানাইগুপ্ত এল ধরে। বেঁটে মোটা মানুষটি আধৰুড়ো। সপ্তাহখানেক দাড়িগোক কামাবার অবকাশ ছিল না, কণ্টকিত হয়ে উঠেছে মুখমণ্ডল। সামনের মাথায় টাক ; ধুতির উপর মোটা খন্দরের চাদর, ধোবার প্রসাদ-বঞ্চিত, জামা নেই। হাত দুটো দেহের পরিমাণে খাটো, মনে হয়, সর্বদা কাজে উদ্যত, দলের লোকের যথাসম্ভব অল্পসংস্থানের জন্যই কানাইয়ের চায়ের দোকান। কানাই তার স্বাভাবিক চাপা ভাঙা গলায় বললে, “ভায়, তোমার খ্যাতি আছে বাকুসংযমে, তুমি মুনি বললেই হয়। এলাদি তোমার সেই খ্যাতি বুঝি দিলে মাটি করে।” ইন্দ্রনাথ হেসে বললে, “কথা না-বলারই সাধনা আমাদের । নিয়মটাকে রক্ষা করবার জন্যেই ব্যতিক্রমের দরকার। এই মেয়েটি নিজে কথা বলে না, অন্তকে কথা বলবার ফাক দেয়, বাক্যের পরে এ একটি বহুমূল্য আতিথ্য ।” “কী বল তুমি ভায় । এলাদি কথা বলে না ! তোমার কাছে চুপ, কিন্তু যেখানে মুখ খোলে সেখানে বাণীর বন্যা । আমি তো মাথাপাকা মানুষ, গাড়া পেলেই খাতাপত্র ফেলে আড়াল থেকে ওর কথা শুনতে আসি । এখন আমার প্রতি একটু মনোযোগ দিতে হবে। এলাদির মতে কণ্ঠ নয় আমার, কিন্তু সংক্ষেপে যেটুকু বলব তা মর্মে প্রবেশ করবে ।” এলা তাড়াতাড়ি উঠে পড়ল। ইন্দ্রনাথ বললে, “বাবার আগে একটা কথা তোমাকে জানিয়ে রাখি । দলের লোকের কাছে আমি তোমাকে নিন্দে করে থাকি । এমন কি, এমন কথাও বলেছি, যে, একদিন তোমাকে হয়তো একেবারে নিশ্চিহ্ন সরিয়ে দিতে হবে বলেছি, অতীনকে তুমি ভাঙিয়ে নিচ্ছ, সেই ভাঙনে আরও কিছু ভাঙবে ।” ബ “বলতে বলতে কথাটাকে সত্য করে তুলছেন কেন ? কী জানি, এখানকার সঙ্গে হয়তো আমার একটা অসামঞ্জস্ত আছে ।” ի “ৰাকা সত্বেও তোমাকে সন্দেহ করি নে। কিন্তু তবু ওদের কাছে তোমার নিন্দে করি । তোমার শত্রু কেউ নেই এই জনপ্রবাদ, কিন্তু দেখতে পাই তোমার বারে আন অঙ্কুরক্তের বাংলাদেশী মন নিন্দ বিশ্বাস করবার আগ্রহে লালারিত হয়ে ওঠে । এই Հեաe