পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চার অধ্যায় ՀՆ (է. “না যদি পারি তবে ?” “তবে কী। তোমরা কজনে জেনে শুনে সেই ডুবোজাহাজেই ঝড়ের মুখে সাংঘাতিক পাল তুলে দিয়েছ, তোমাদের পাঁজর কাপে নি। এমন যে-কজনকে পাই ডুবতে ভুবতে •তাদের নিয়েই আমাদের জিত । রসাতলে যাবার জন্তে যে-দেশ অন্ধভাবে প্রস্তুত তারি মাস্তলে তোমরা শেষ পর্যন্ত জয়ধ্বজা উড়িয়েছ, তোমরা না করেছ মিধ্যে আশা, না করেছ কাঙালপনা, না কেঁদেছ নৈরাস্তে হাউ হাউ করে । তোমরা তবু হাল ছাড় নি যখন জলে ভরেছে জাহাজের খোল। হাল ছাড়াতেই কপুরুষতা—বাস, আমার কাজ হয়ে গেছে তোমাদের যে-কজনকে পেয়েছি তাদেরই নিয়ে। তার পরে ? কৰ্মণ্যে-- বাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন।” “তুমি যা বলছ তার মধ্যে থেকে একটা প্রধান কথা বাদ গেছে বলে বোধ হয়।” “কোন কথাটা ?” “তোমার মনে কি রাগও নেই ? এত ইস্পার্সোন্তাল তুমি ” “রাগ কার পরে ?”

  • ইংরেজের পরে।” 1.
  • ষে জোয়ান মদ খেয়ে চোখ লাল না করলে লড়তে পারেই না, সেই গ্রাম্যকে আমি অবজ্ঞা করি। রাগের মাথায় কর্তব্য করতে গেলে অকর্তব্য করার সম্ভাবনাই বেশি ।”

“ত হ’ক, কিন্তু রাগের কারণ থাকলে রাগ না করাটা অমানবিক ৷” “সমস্ত যুরোপের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে, আমি ইংরেজকেও জানি। যত পশ্চিমী জাত আছে তার মধ্যে ওরা সব-চেয়ে বড়ো জাত। রিপুর তাড়ায় ওরা যে মারতে পারে না তা নয় কিন্তু পুরোপুরি পারে না—লজ্জা পায়। ওদের নিজেদের মধ্যে যার বড়ো তাদেরই কাছে জবাবদিহি করতে ওদের সব-চেয়ে ভয় ;–ওরা নিজেকে ভোলায় তাদেরও ভোলায়। ওদের উপরে যতট রাগ করলে ফুল স্টীম বানিয়ে তোলা যায় ততট রাগ করা আমার দ্বারা সম্ভব হয় না।” “অদ্ভুত তুমি।”

  • যোলো আনা মারের চোটে আমাদের মেরুদণ্ড ওরা চিরকালের মতো গুড়িয়ে দিতে পারত। সেটা ওরা পারলে না। আমি ওদের মকুন্যত্বকে বাহাদুরি দিই। পরের দেশ শাসন করতে করতে সেই মচুন্যত্ব ক্ষয় হয়ে আসছে তাতেই মরণদশ ধরছে ওদের ভিতর থেকে। এত বেশি বিদেশের বোৰ আর কোনো জাতের ঘাড়ে নেই

এতে ওদের স্বভাব যাচ্ছে নষ্ট হয়ে ।” 4