পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চার অধ্যায় - ۹ هوا অলৌকিক ; তেমন অপরিসীম ঐশ্বৰ প্রত্যক্ষ হবে ওর জীবনে, সে-কথা এর আগে ও কখনোই সম্ভব বলে ভাবতে পারে নি, কেবল তার কল্পরূপ দেখেছে কাব্যে ইতিহাসে ; বারেবারে মনে হয়েছে দাস্তে বিয়াত্রিচে নূতন জন্ম নিল ওদের দুজনের মধ্যে। সেই .ঐতিহাসিক প্রেরণ ওর মনের ভিতরে কথা কয়েছে, দান্তের মতোই রাষ্ট্ৰীয় বিপ্লবের আবর্তের মধ্যে অতীন পড়েছিল বাপ দিয়ে, কিন্তু তার সত্য কোথায়, বীর্ষ কোথায়, গৌরব কোথায়, দেখতে দেখতে অনিবাৰ্ধ বেগে যে পাকের মধ্যে ওকে টেনে নিয়ে এল সেই মুখোশপরা চুরিভাকাতি-খুনোখুনির অন্ধকারে ইতিহাসের আলোকস্তম্ভ কখনো উঠবে না। আত্মার সর্বনাশ ঘটিয়ে অবশেষে আজ সে দেখছে কোনো যথার্থ ফল নেই এতে, নিসংশয় পরাভব সামনে। পরাভবেরও মূল্য আছে কিন্তু আত্মার পরাভবের নয়, ষে-পরাভব টেনে আনল গোপনচার বীভৎস বিভীষিকায়, যার অর্থ নেই যার অস্ত নেই। দিনের আলো মান হয়ে এল। বিবি পোকার ডাক উঠেছে প্রাঙ্গণে, কোথায় গরুর গাড়ি চলেছে তার আর্তস্বর শোনা যায়। হঠাৎ ঘরের মধ্যে দ্রুতপদে এসে পড়ল এলা, আত্মহত্যার জন্যে এককোকে মাস্থ্য জলে পড়ে যেমন ভাবে তেমনি আলুখালু অন্ধবেগে । অতীন লাফ দিয়ে দাড়িয়ে উঠতেই তার বুকের উপর সে বাপিয়ে পড়ল। বাস্পরুদ্ধস্বরে বলতে লাগল, “অতীন, অতীন, পারলুম না থাকতে।” অতীন ধীরে ধীরে ওকে ছাড়িয়ে নিয়ে সামনে সরিয়ে ধরে ওর অশ্রুসিক্ত মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। বললে, “এল, কী কাও করলে তুমি ?” সে বললে, “কিছু জানি নে, কী করেছি।” “এ ঠিকানা কেমন করে জানলে ?” এলা গভীর অভিমানে বললে, “তোমার ঠিকানা তুমি তো জানাও নি।” “যে তোমাকে জানিয়েছে সে তোমার বন্ধু নয় ।” 当 "তাও আমি নিশ্চিত জানি কিন্তু তোমার কোনো পথ না জানতে পারলে শূন্তে শূন্তে মন ঘুরে বেড়ায়, অসহ হয়ে ওঠে। শক্রমিত্র বিচার করবার মতো অবস্থা আমার নয়। কতকাল তোমাকে দেখি নি বলে দেখি ?” “ধন্ত তুমি !” 轟 “তুমি ধন্ত অস্তু ! যেমনি আমার বাড়িতে আসা নিষেধ হল অমনি সেটা তো মেনে নিতে পারলে ” “ওটা আমার স্বাভাবিক স্পর্ধ। প্রচণ্ড ইচ্ছে আমাকে অজগর সাপের মতো দিনরাত পাক দিয়ে দিয়ে পিযেছিল তবু তাকে মানতে পারলুম না। ওরা আমাকে