পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চার অধ্যায় ల) গুরুমশার কানে ধরে এই কথাটা বলতেই এত কৃত্রিমতার স্বষ্টি হয়েছে। তোমাকে মুখের উপরই বলছি ওদের যে-পাড়ায় অহংকার করে নম্রতা করতে যাও সেখানে তোমারও জায়গা নেই। দেৰী ! সবাই দেবী তোমরা । নকল দেবীর কৃত্রিম সাজ, 4য়েদের অন্ত সাজেরই মতে, পুরুষ-অর্জির দোকানে বানানো।” 蔓 “দেখো অভ, আজও বুঝতে পারি নে ঘে-পথ তোমার নয়, সে-পথ থেকে কেন তুমি জোর করে ফিরে আস নি ?” * “তাহলে বলি। অনেক কথা জানতুম না অনেক কথা ভাবি নি এই পথে প্রবেশ করবার আগে। একে একে এমন সব ছেলেকে কাছে দেখলুম, বয়সে যারা ছোটো না হলে যাদের পায়ের ধুলো নিতুম। আর চোখের সামনে কী দেখেছে, কী সয়েছে, কী অপমান হয়েছে তাদের, সে-সব দুর্বিষহ কথা কোথাও প্রকাশ হবে না । • এরই অসহ ব্যথায় আমাকে খেপিয়ে তুলেছিল। বারবার মনে মনে প্রতিজ্ঞ করেছি, ভয়ে হার মানব না, পীড়নে হার মানব বা, পাথরের দেয়ালে মাথা ঠুকে মরব তৰু তুড়ি মেরে উপেক্ষা করব সেই হৃদয়হীন দেয়ালটাকে ।” *তারপরে কি তোমার মত বদলে গেল ?” “শোনো আমার কথা। শক্তিমানের বিরুদ্ধে যে লড়াই করে, সে উপায়বিহীন হলেও সে-ই শক্তিমানের সমকক্ষে দাড়ায় ; তাতে তার সম্মান রক্ষা হয়। সেই সম্মানের অধিকার আমি কল্পনা করেছিলুম। দিন যতই এগোতে থাকল চোখের সামনে দেখা গেল,—অসাধারণ উচ্চ মনের ছেলে অল্পে অল্পে মন্থস্বত্ব খোয়াতে থাকল। এতবড়ো লোকসান আর কিছুই নেই। নিশ্চিত জানতুম আমার কথা হেসে উড়িয়ে দেবে, রেগে বিদ্রুপ করবে, তবু ওদের বলেছি অন্যায়ে অন্তায়কারীর সমান হলেও তাতে হার, পরাজয়ের আগে মরবার আগে প্রমাণ করে যেতে হবে আমরা ওদের চেয়ে মানবধর্মে বড়ো—নইলে এতবড়ো বলিষ্ঠের সঙ্গে এমনতরে হারের খেল খেলছি কেন ? নিৰ্বদ্ধিতার আত্মঘাতের জন্তে —আমার কথা ওদের কেউ বোঝে নি তা নয়। কিন্তু क७ जनहे या !” “তখনও ওদের ছাড়লে না কেন ?" + *আর কি ছাড়তে পারি ? তখন যে শাস্তির নিষ্ঠুর জাল সম্পূর্ণ জড়িয়ে এসেছে ওদের চারদিকে। ওদের ইতিহাস নিজে দেখলুম, বুঝতে পেরেছি ওদের মর্মান্তিক বেদন, সেইজপ্তেই রাগই করি আর ঘূণাই করি, তবু বিপদের ত্যাগ করতে পারি নে। কিন্তু একটা কথা এই অভিজ্ঞতায় সম্পূর্ণ বুঝেছি, গায়ের জোরে আমরা বাদের অত্যন্ত অসমকক্ষ তাদের সঙ্গে গায়ের জোরের মল্লযুদ্ধ করতে চেষ্টা করলে আন্তরিক দুৰ্গতি