পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬ রবীন্দ্র-রচনাবলী মা বললে, “কেন ঐ যে চাটুজ্যেদের পুলিন, নাই বা হল কুলীন,— দেখতে যেমন তেমনি স্বভাবখানি, পাস করে ফের পেয়েছে জলপানি, সোনার টুকরো ছেলে । এক-পাড়াতে থাকে ওরা—ওরি সঙ্গে হেসে খেলে মেয়ে আমার মাহুষ হল ; ওকে যদি বলি আমি আজই একৃখনি হয় রাজি ।” বাপ বললে, “থামো, আগরে অারে রামো: | ওরা আছে সমাজের সব তলায় । বামুন কি হয় পইতে দিলেই গলায় ? দেখতে শুনতে ভালো হলেই পাত্র হল ! রাধে ! স্ত্রীবুদ্ধি কি শাস্ত্রে বলে সাধে ।” যেদিন ওরা গিনি দিয়ে দেখলে কনের মুখ সেদিন থেকে মঞ্জুলিকার বুক প্রতি পলের গোপন কাটায় হল রক্তে মাথা । মায়ের স্নেহ অন্তর্যামী, তার কাছে তে রয় ন কিছুই ঢাকা ; মায়ের ব্যথা মেয়ের ব্যথা চলতে খেতে শুতে ঘরের আকাশ প্রতিক্ষণে হানছে যেন বেদনা-বিদ্যুতে । অটলতার গভীর গর্ব বাপের মনে জাগে,-— সুখে দুঃখে দ্বেষে রাগে ধর্ম থেকে নড়েন তিনি নাই হেন দৌর্বল্য । তার জীবনের রথের চাকা চলল লোহার বাধা রাস্ত দিয়ে প্রতিক্ষণেই, কোনোমতেই ইঞ্চিখানেক এদিক-ওদিক একটু হবার জো নেই ।