পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পলাতকা ছেড়ে লজাভয় কন্যা তখন নিঃসংকোচে কয় বাপের কাছে গিয়ে,— “তুমি নাকি করতে যাবে বিয়ে । আমরা তোমার ছেলেমেয়ে নাতনী-নাতি যত সবার মাথা করবে নত ? মায়ের কথা ভুলবে তবে ? তোমার প্রাণ কি এত কঠিন হবে ।” বাবা বললে শুষ্ক হাসে, “কঠিন আমি কেই বা জানে না সে ? আমার পক্ষে বিয়ে করা বিষম কঠোর কর্ম, কিন্তু গৃহধর্ম স্ত্রী না হলে অপূর্ণ যে রয় মন্ত্র হতে মহাভারত সকল শাস্ত্রে কয় । সহজ তো নয় ধর্মপথে হাট, এ তো কেবল হৃদয় নিয়ে নয়কো কাদাকাটা । যে করে ভয় দুঃখ নিতে দুঃখ দিতে সে কাপুরুষ কেনই আসে পৃথিবীতে।” বাখরগঞ্জে মেয়ের বাপের ঘর । সেথায় গেলেন বর বিয়ের কদিন আগে । বোঁকে নিয়ে শেষে । যখন ফিরে এলেন দেশে, ঘরেতে নেই মঞ্জুলিক । খবর পেলেন চিঠি পড়ে পুলিন তাকে বিয়ে করে গেছে দোহে ফরাক্কাবাদ চলে, সেইখানেতেই ঘর পাতবে ব'লে। আগুন হয়ে বাপ বারে বারে দিলেন অভিশাপ ।