899 রবীক্স-রচনাবলী , অতএব দুঃখ এবং আঘাত স্তাষ্য হ’ক বা অস্থায্য হ’ক তার সংস্পর্শ থেকে নিজেকে নিঃশেষে বাঁচিয়ে চলবার অতিচেষ্টায় আমাদের মনুষত্বকে দুর্বল ও ব্যাধিগ্রন্ত করে তোলে । q এই ভীরুতায় শুধুমাত্র বিলালিতার পেলবতা ও দৌর্বল্য জন্মে তা নয় ষে-সমস্ত অতিবেদনাশীল লোক আঘাতের ভয়ে নিজেকে আবৃত করে তাদের গুচিত নষ্ট হয়— আবরণের ভিতরে ভিতরে তাদের অনেক মলিনতা জমতে থাকে ;-যতই লোকের ভয়ে তারা সেগুলো লোকচক্ষুর সামনে বের করতে না চায় ততোই সেগুলো দূষিত হয়ে উঠে স্বাস্থ্যকে বিকৃত করতে থাকে । পৃথিবীর নিন্দ অবিচার দুঃখকষ্টকে যারা অবাধে অসংকোচে গ্রহণ করতে পারে তারা কেবল বলিষ্ঠ হয় তা নয় তারা নির্মল হয়, অনাবৃত জীবনের উপর দিয়ে জগতের পূর্ণসংঘাত লেগে তাদের কলুষ ক্ষয় হয়ে যেতে থাকে । অতএব সমস্ত মনপ্রাণ নিয়ে প্রস্তুত হও– যিনি সুখকর তাকে প্রণাম করে এবং যিনি দুঃখকর তাকেও প্রণাম করো–তা হলেই স্বাস্থ্যলাভ করবে শক্তিলাভ করবে— যিনি শিব যিনি শিবতর তাকেই প্রণাম করা হবে । ২৬ আগ্রহায়ণ ১৩১৫ ত্যাগ প্রতিদিন প্রাতে আমরা যে এই উপাসনা করছি যদি তার মধ্যে কিছু সত্য থাকে তবে তার সাহাষ্যে আমরা প্রত্যহু অল্পে অল্পে ত্যাগের জন্ত প্রস্তুত হচ্ছি। নিতান্তই প্রস্তুত হওয়া চাই, কারণ, সংসারের মধ্যে একটি ত্যাগের ধর্ম আছে, তার বিধান অমোঘ। সে আমাদের কোথাও দাড়াতে দিতে চায় না ; সে বলে কেবলই ছড়িতে হবে এবং এগোতে হবে। এমন কোথাও কিছুই দেখতে পাচ্ছি নে যেখানে পৌঁছে বলতে পারি এইখানেই সমস্ত সমাপ্ত হল, পরিপূর্ণ হল, অতএব এখান থেকে আর কোনোকালেই নড়ব না । - সংসারের ধর্মই যখন কেবল ধরে রাখা নয়, সরিয়ে দেওয়া, এগিয়ে দেওয়-তখন তারই সঙ্গে আমাদের ইচ্ছার সামঞ্জস্ত সাধন না করলে দুটোতে কেবলই ঠোকাঠুক্তি হতে থাকে। আমরা যদি কেবলই বলি আমরা থাকব জামরা রাখব আর সংসার ৰলে তোষাকে ছাড়তে হবে চলতে হবে, তাহলে বিষম কষ্ট উৎপন্ন হতে থাকে ।
