পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন । 8१७ হয়ে পড়ভূম আজ সে-কাজে ক্লাস্তি নেই—হঠাৎ কাজ হালকা হয়ে গেছে। পয়সা সেই পয়সাই আছে, কাজ সেই কাজই আছে, কেবল তার ওজন কমে গেছে কেননা টান যে আজ আমার নিজের কেন্দ্রের দিকে নয় ; প্রেমে যে আমাকে বাইরে টান দিয়ে একেবারে এক মুহূর্তে সমস্ত জগতের বোঝা নামিয়ে দিয়ে গেছে । আমাদের সাধনা যেমনই হ’ক আমাদের সংসার সেই সঙ্গে যদি হালকা হতে না থাকে তবে বুঝব যে হল না। যদি বুঝি টাকার ওজন তেমনি ভয়ানক আছে, উপকরণের বোঝা তেমনিই আমাকে চেপে আছে, তার মধ্যে অতি ছোটো টুকুকেও ফেলে দিতে পারি এমন বল আমার নেই ; যদি দেখি কাজ যত বড়ো তার ভার যেন তার চেয়ে অনেক বেশি তাহলে বুঝতে হবে প্রেম জোটে নি—আমাদের বরণসভায় বর আসে নি । তবে আর ওই শান্তিটুকু নিয়ে কী হবে ? ওতে আমাদের আসল জিনিসটা ফাকি দিয়ে অল্পে সন্তুষ্ট করে রাখবে । প্রেমের মধ্যে শুধু শাস্তি নেই তাতে অশান্তিও আছে ; জোয়ারের জলের মতে কেবল ষে তার পূর্ণতা তা নয় তারই মতো তার গতিবেগও আছে ;–সে আমাদের ভরিয়ে দিয়ে বসিয়ে রাখবে না, সে আমাদের ভাটার মুখের থেকে ফিরিয়ে উলটো টানে টেনে নিয়ে যাবে—তখন এই আচল সংসারটাকে নিয়ে কেবলই গুণ-টানাটানি লগি-ঠেলাঠেলি করে মরতে হবে না—সে ছহু করে ভেসে চলবে । যতদিন সেই প্রেমের টান না ধরে ততদিন শাস্তিতে কাজ নেই—ততদিন অশাস্তিকে যেন অনুভব করতে পারি। ততদিন যেন বেদনাকে নিয়ে রাত্রে স্ততে যাই এবং বেদনাকে নিয়ে সকাল বেলায় জেগে উঠি—চোখের জলে ভাসিয়ে দাও, স্থির থাকতে দিয়ে না । প্রতিদিন প্রাতে যখন অন্ধকারের দ্বার উদঘাটিত হয়ে যায়, তখন ষেন দেখতে পাই বন্ধু দাড়িয়ে আছ, মুখের দিন হ’ক, দুঃখের দিন হ’ক, বিপদের দিন হ’ক, তোমার সঙ্গে আমার দেখা হল, আজ আমার আর ভাবনা নেই, আমার আল সমস্তই সহ হবে। যখন প্রেম না থাকে, হে সখা, তখনই শান্তির জন্তে দরবার করি। তখন অল্প পূজিতে ষে কোনো আঘাত সইতে পারি নে–কিন্তু ৰখন প্রেমের অভু্যদয় হয় তখন ষে-দুঃখ ষে-অশাস্তিতে সেই প্রেমের পরীক্ষা হবে সেই দুঃখ সেই অশাস্তিকেও মাথায় তুলে নিতে পারি। হে বন্ধু, উপাসনার সময় আমি আর শান্তি চাইব না— আমি কেবল প্রেম চাইব । প্রেম শাস্তিরূপেও আসবে অশান্তিরূপেও আসবে, মুখ হয়েও আসবে দুঃখ হয়েও আসবে—সে যে-কোনো Ju . ه به سیاست ه ,*w * n