পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাস্তিনিকেতন દાન ૧ কংকারে অনন্ত আকাশের সমস্ত নক্ষত্ৰলোক ঝংকৃত হয়ে অপূর্ব নিশেষ সংগীতে গাথা পড়ছিল। তার পরে ষখন গুতে গেলুম তখন এই কথাটি মনে নিয়ে নিত্রিত হলুম যে, আমি যখন মুপ্তিতে অচেতন থাকব তখনও সেই জাগ্রত বীনকারের নিশীথ রাত্রের বীণা বন্ধ হবে না - তখনও তার যে ঝংকারের তালে নক্ষত্রমণ্ডলীর নৃত্য চলছে সেই তালে তালেই আমার নিদ্রানিতৃত দেহ-নাট্যশালায় প্রাণের নৃত্য চলতে থাকবে, আমার হৃৎপিণ্ডের নৃত্য থামবে না, সর্বাঙ্গে রক্ত নাচবে এবং লক্ষ লক্ষ জীবকোষ আমার সমস্ত শরীরে সেই জ্যোতিষ্কসভার সংগীতচ্ছন্দেই স্পদিত হতে থাকবে ।

  • বাজে বাজে রম্যবীণা বাজে ।” আবার আমাদের ওস্তাদজি আমাদের হাতেও একটি করে ছোটো বীণা দিয়েছেন । র্তার ইচ্ছে আমরাও তার সঙ্গে মুর মিলিয়ে

বাজাতে শিখি । র্তার সভায় তারই সঙ্গে বসে আমরা একটু একটু সংগত করব এই তার মেহের অভিপ্রায় । জীবনের বীণাটি ছোটো কিন্তু এতে কত তারই চড়িয়েছেন । সব তারগুলি মুর মিলিয়ে বাধা কি কম কথা ! এটা হয় তো ওটা হয় না, মন যদি হল তো আবার শরীর বাদী হয়—একদিন যদি হল তো আবার আর-একদিন তার নেবে যায়। কিন্তু ছাড়লে চলবে না। একদিন তার মুখ থেকে এ কথাটি শুনতে হবে—বাহবা, পুত্র, বেশ । এই জীবনের বীণাটি একদিন তার পায়ের কাছে গুজরিয়া গুঞ্জরিয়া তার সব রাগিণীটি বাজিয়ে তুলবে। এখন কেবল এই কথাটি মনে রাখতে হবে যে, সব তারগুলি বেশ এটে বাধা চাই—টিল দিলেই ঝনঝন খনখন করে। যেমন এটে বাধতে হবে তেমনি তাকে মুক্তও রাখতে হবে—তার উপরে কিছু চাপা পড়লে সে আর বাজতে চায় না । নির্মল মুরটুকু যদি চাও তবে দেখে তারে যেন ধুলো না পড়ে – মরচে না পড়ে—আর প্রতিদিন তার পদপ্রান্তে বসে প্রার্থনা করে- হে আমার গুরু, তুমি আমাকে বেস্থর থেকে মুর নিয়ে যাও। ও পৌষ Ö হিসাব রোজ কেবল লাভের কথাটাই শোনাতে ইচ্ছে হয়। হিসাবের কথাটা পাড়তে মন ৰায় না। ইচ্ছে করে কেবল রসের কথাটা নিয়েই নাড়াচাড়া করি, ষে-পাত্রের মধ্যে সেই রস থাকে সেটাকে বড়ো কঠিন বলে মনে হয়। । কিন্তু ভারতের নিচের তলায় সত্য বসে রয়েছেন তাকে একেবারে বাদ দিয়ে সেই আনহ্মলোকে বাবার জো নেই। l 部