পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SOS রবীন্দ্র-রচনাবলী মাছের লেজের কাপটা লাগে, শালুক ওঠে দুলে ; রোদ পড়েছে নাচনমণির ভিজে চিকন চুলে । কোথায় ঘাটের ফাটল থেকে ডাকল কোলব্যাঙ, খড়গপুরের ঢাকে ঢোলে বাজল ডাডাঙি ডাঙ । কঁপিছে ছায়া আঁকাবঁকা, কলমিপাড়ের পুকুরজল খেতে যায় এক-পা-কটা তিন পেয়ে এক কুকুর । শেয়ালকাটার বন পেরিয়ে চলে বিয়ের যাত্রী । গ্যাগো করে রেডিয়েটা, কে জানে কার জিতমেশিনগানে ওঁড়িয়ে দিল সভাবিধির ভিত । টিয়ের মুখের বুলি শুনে হাসছে ঘরে পরেরাধে কৃষ্ণ, রাধে কৃষক, কুক কুক হরে । দিন চলে যায় গুনগুনিয়ে ঘুমপাড়ানির ছড়া, শানবাধানো ঘাটের ধারে নামছে কাখের ঘাড়া । আতাগাছের তোতাপাখি, ডালিমগাছে মীে, হীরোদাদার মডুমড়ে থান, ঠাকুরদাদার বউ । পুকুরপাড়ে জলের ঢেউয়ে দুলছে ঝোপের কেয়া, পাটনি চালায় ভাঙা ঘাটে তালের ডোঙার খেয়া । খোকা গেছে মোব চরাতে, খেতে গেছে। ভুলে, কোথায় গেল। গমের রুটি শিকের পরে তুলে । আমার ছড়া চলেছে আজ রূপকথাটা যেবে, কলম আমার বেরিয়ে এল বহুরূপীর বেশে । আমরা আছি হাজার বছর ঘুমের ঘোরের গায়ে, vaSI Qeçi Qytë Galvatisal-Qarata i কচি কুমড়োর কোল রাধা হয়, জোড়পুতুলের বিয়ে, বাধা বুলি ফুকরে ওঠে কমলাপুলির টিয়ে । ছাইয়ের গাদায় ঘুমিয়ে থাকে পাড়ার ধোঁকি কুকুর, পাতিহাটে বেতোঘোড়া চলেটুকুরটুকুর । তালগাছেতে হতোমথুমো পাকিয়ে আছে ভুরু, তক্তিমালা হড়মবিবির গলাতে সাতপুরু। আধেক জাগায় আধেক ঘুমে ঘুলিয়ে আছে হাওয়া, দিনের রাতের সীমানাটা পেচোয়-দানোয়া-পাওয়া । ভাগ্যলিখন কাপাসা কালির, নয়। সে পরিকরদুঃখসুখের ভাঙা বেড়ায় সমান যে দুই ধাের । কামারহাটার কঁকুড়াগাছির ইতিহাসের টুকরো, ভেসে চলে ভাটার জলে উইয়ে-স্কুলে-ফুকরো। অঘটন তো নিত্য ঘটে রান্তাঘাট চলতে, লোকে বলে, সত্যি নাকি - ঘুমোয় বলতে বলতে । সিদুপারে চলছে হােথায় উলটাপালট কাণ্ড, হাড় ওঁড়িয়ে বানিয়ে দিলে নতুন কী ব্ৰহ্মাণ্ড ।