পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Strbr রবীন্দ্র-রচনাবলী । “তুমি না ভেবে একবার আমাকে ভাবতে দাও-না। সে তো দিতেই হবে। আমি তো এখন খুঁকি নই। তুমি ভাবিছ সেই সব পাবলিক জায়গায় নানা লোকের যাওয়া-আসা আছে, সে একটা বিপদ । জগৎসংসারে লোকচলাচল তো বন্ধ হবে না তোমার খাতিরে। আর তাদের সঙ্গে আমার জানাশুনো একেবারেই ঠেকিয়ে রাখবে যে সে আইন তো তোমার হাতে নেই।” “জানি সব জানি, ভয় করে ভয়ের কারণ ঠেকিয়ে রাখতে পারব না। তা হলে তুই ওদের হাইয়র স্টাডি সার্কলে ভরতি হতে চাস ?” “如可酸严 “আচ্ছা তাই হবে। সেখানকার পুরুষ অধ্যাপকদের একে একে দিবি জাহান্নামে সে জানি। কেবল একটি কথা দিতে হবে আমাকে । কোনোমতেই তুই রেবতীর কাছে ঘেঁষতে পাবি নে। আর কোনো ছুতোতেই ঢুকবি নে তার ল্যাবরেটরিতে।” “মা, তুমি আমাকে কী মনে কর ভেবে পাই নে। কাছে ঘেঁষতে যাব তোমার ঐ খুদে সার আইজাক নিউটনের, এমন রুচি আমার ?- মরে গেলেও না ।” সংকোচ বোধ করলে রেবতী শরীরটাকে নিয়ে যেরকম আঁকুবাকু করে তারই নকল করে নীলা বললে, “ঐ স্টাইলের পুরুষকে নিয়ে আমার চলবে না। যে-সব মেয়েরা ভালোবাসে বুড়ো খোকদের মানুষ করতে, ওকে জিইয়ে রেখে দেওয়া ভালো তাদেরই জন্যে । ও মারবার যোগ্য শিকারই নয়।” “একটু বেশি বাড়িয়ে কথা বলছিস নীলা, তাই ভয় হচ্ছে ওটা ঠিক তোর মনের কথা নয়। তা হােক, ওর সম্বন্ধে তোর মনের ভাব যাই হােক, ওকে যদি মাটি করতে চাস তা হলে সে তোর পক্ষে उ9वीं शत कीं ।” “কখন তোমার কী মর্জি কিছুই বুঝতে পারি। নে মা। ওর সঙ্গে আমার বিয়ে দেবার জন্যে তুমি আমাকে সাজিয়ে পুতুল গড়ে তুলেছিলে, সে কি আমি বুঝতে পারিনি। সেইজনেই কি তুমি আমাকে ওর বেশি কাছে আনাগোনা করতে বারণ করছ, পাছে, চেনাশোনার ঘোষ লেগে পালিশ নষ্ট হয়ে श| ° “দেখ নীলা, আমি তোকে বলে দিচ্ছি। তোর সঙ্গে ওর বিয়ে কিছুতেই হতে পারবে না।” “তা হলে আমি যদি মোতিগড়ের বাজকুমারকে বিয়ে করি ?” “ইচ্ছা হয় তো করিস।” “সুবিধে আছে, তার তিনটে বিয়ে, আমার দায় অনেকটা হালকা হবে, আর সে মদ খেয়ে ঢলঢলি করে নাইটক্লাবে- তখন আমি অনেকটা ছুটি পাব।” “আচ্ছা বেশ, সেই ভালো। রেবতীর সঙ্গে তোর বিয়ে হতে দেব না।” “কেন, তোমার সার আইজাক নিউটনের বুদ্ধি আমি ঘুলিয়ে দেব মনে করা ?” “সে তর্ক থােক, যা বললুম তা মনে রাখিস ।” “উনি নিজেই যদি হাংল্যাপনা করেন ।” “তা হলে এ পাড়া তাকে ছাড়তে হবে- তোর অন্নে তাকে মানুষ করিস, তোর বাপের তহবিল থেকে এক কড়িও সে পাবে না।” “সর্বনাশ ! তা হলে নমস্কার সার আইজাক নিউটন ।” সেদিনকার পালা সংক্ষেপে এই পর্যন্ত । àd “চৌধুরীমশায়, আর সবই চলছে ভালো কেবল আমার মেয়ের ভাবনায় সুস্থির হতে পারছি নে। ও যে কোন দিকে তাক করতে শুরু করেছে, বুঝতে পারছি নে ৷” চৌধুরী বললেন, “আবার ওর দিকে তাক করছে। কারা সেটাও একটা ভাববার কথা। হয়েছে কি,