পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

डिन ननी Q) নীলা বললে, “সে হতে পারবে না, মা । আমাদের একটা গোপন পরামর্শ আছে, এখানে তোমার থাকা উচিত হবে না।” “দেখ নীলা, চাতুরীর পালা তুই সবে শুরু করেছিস, এখনো আমাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবি নে। তোদের কিসের পরামর্শ সে খবর কি আমি পাই নি। বলে দিচ্ছি, তোদের সেই পরামর্শের জন্যে আমারই থাকা সব চেয়ে দরকার ।” নীলা বললে, “তুমি কী শুনেছি, কার কাছে।” “খবর নেবার ফন্দি থাকে গর্তর সাপের মতো টাকার থলির মধ্যে। এখানে তিনজন আইনওয়ালা মিলে দলিলপত্র ঘেঁটে বের করতে চাও ল্যাবরেটরি ফন্ডে কোনো ছিদ্র আছে কিনা। তাই নয় কি, मैीलू।” নীলা বললে, “তা সত্যি কথা বলব। বাবার অতখানি টাকায় তার মেয়ের কোনো শেয়ার থাকবে না, এটা অস্বাভাবিক । তাই সবাই সন্দেহ করে-” সোহিনী চৌকি থেকে উঠে দাঁড়াল। বললে, “আসল সন্দেহের মূল আরো অনেক আগেকার দিনের। কে তোর বাপ, কার সম্পত্তির শেয়ার চাস । এমন লোকের তুই মেয়ে এ কথা মুখে আনতে তোর লজা করে না ?” নীলা লাফিয়ে উঠে বললে, “কী বলছি, মা ।” “সত্যি কথা বলছি। তার কাছে কিছুই গোপন ছিল না, তিনি জানতেন সব । আমার কাছে যা পাবার তা তিনি সম্পূৰ্ণ পেয়েছেন, আজও পাবেন তা, আর-কিছু তিনি গ্রাহ্য করেন নি।” ব্যারিস্টার ঘোষ বললে, “আপনার মুখের কথা তো প্রমাণ নয়।” “সে কথা তিনি জানতেন । সকল কথা খোলসা করে তিনি দলিল রেজেক্ট করে গেছেন।” "ওহে বন্ধু, রাত হল যে, আর কেন। চলো।” পেশোয়ারীর ভঙ্গি দেখে পয়ষটি জন অন্তর্ধন করলে । এমন সময় সুটকেস হাতে এসে উপস্থিত চৌধুরী। বললেন, “তোমার টেলিগ্রাম পেয়ে ছুটে আসতে হল। কী রে রেবি, বেবি, মুখখানা যে পার্টমেন্টের মতো সাদা হয়ে গেছে। ওরে, খোকার দুধের বাটি গেল কোথায় ।” নীলাকে দেখিয়ে সোহিনী বললে, “যিনি জোগাবেন তিনি যে ঐ বসে আছেন।” “গয়লানীর ব্যাবসা ধরেছ নাকি, মা ।” “গয়লা ধরার ব্যাবসা ধরেছে, ঐ যে বসে আছে শিকারটি ।” “কে, আমাদের রেবি নাকি ৷” “এইবার আমার মেয়ে আমার ল্যাবরেটরিকে বঁচিয়েছে। আমি লোক চিনতে পারি নি; কিন্তু আমার মেয়ে ঠিক বুঝেছিল যে ল্যাবরেটরিতে গোয়ালঘর বসিয়ে দিয়েছিলুম- গোবরের কুণ্ডে আর-একটু হলেই ডুবত সমস্ত জিনিসটা।” অধ্যাপক বললেন, “মা, তুমি এই জীবটিকে আবিষ্কার করেছি। যখন, তখন এই গোষ্ঠবিহারীয় ভার তোমাকেই নিতে হবে। ওর আর সবই আছে কেবল বুদ্ধি নেই, তুমি কাছে থাকলে তার অভাবটা টের পাওয়া যাবে না। বোকা পুরুষদের নাকে দড়ি দিয়ে চালিয়ে নিয়ে বেড়ানো সহজ ।” নীলা বললে, “কী গো সার আইজাক নিউটন, রেজেষ্টি আপিসে নোটস তো দেওয়া হয়েছে, ििग्न निठ bl७ ना ि।” বুক ফুলিয়ে রেবতী বললে, “মরে গেলেও না।” "বিয়েটা হবে তা হলে অশুভ লয়ে।”. “হবেই, নিশ্চয় হবে ।” সোহিনী বললে, “কিন্তু ল্যাবরেটরি থেকে শত হন্তে দূরে।” অধ্যাপক বললেন, “মা নীলু, ও বোকা, কিন্তু অক্ষম নয়। ওর নেশােটা কেটে যাক, তার পরে ওর