পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ठिन সী। VOOS আমি ব্যস্ত হয়ে বলে উঠলুম, “কিছু জানা নেই- বোঝাতে গেলে আপনার বৃথা সময় নষ্ট হবে ।” বৃদ্ধ ব্যগ্ৰহয়ে বলে উঠলেন, “এখানে সময়ের অভাব কোথায়। আচ্ছা, এক কাজ করুন-না, আজই চলুন আমার ওখানে আহার করবেন ।” আমি লাফ দিয়ে বলতে যাচ্ছিলুম, “এখখনি ' অচিরা বলে উঠল, “দাদু, সাধে তোমাকে বলি ছেলেমানুষ । যখন খুশি নেমন্তয় করে ফেল, আমি পড়ি মুশকিলে। ওঁরা বিলেতের ডিনার-খাইয়ে সর্বগ্রাসী মানুষ, কেন তোমার নাতনির বদনাম করবে।” অধ্যাপক ধমক-খাওয়া বালকের মতো বললেন, “আচ্ছা, তবে আর কোন দিন আপনার সুবিে হবে বলুন ।” “সুবিধে আমার কালই হতে পারবে কিন্তু অচিরাদেবীকে রসদ নিয়ে বিপন্ন করতে চাই নে। পাহাড়ে পর্বতে ঘুরি, সঙ্গে রাখি থলি ভরে চিড়ে, ছড়াকয়েক কলা, বিলিতি বেগুন, কঁচা ছোলার শাক, চিনেবাদাম । আমিই বরঞ্চ সঙ্গে নিয়ে আসব ফলারের আয়োজন । অচিরাদেবী যদি স্বহন্তে দই দিয়ে মেখে দেন লজ্জা পাবে ফিরপোর দোকান ৷” “দাদু, বিশ্বাস কোরো না। এই সব মুখমিষ্টি লোককে। উনি নিশ্চয় পড়েছেন তোমার সেই লেখাটা বাংলা কাগজে, সেই ভিটামিনের গুণপ্রচার। তাই তোমাকে খুশি করবার জন্যে শোনালেনটিড়োকলার झी ।' মুশকিলে ফেললে । বাংলা কাগজ পড়া তো আমার ঘটেই ওঠে না। অধ্যাপক উৎফুল্প হয়ে জিগগোসা করলেন, “সেটা পড়েছেন বুঝি ?” অচিরার চােখের কোণে দেখতে পেলুম একটু হাসি। তাড়াতাড়ি শুরু করে দিলুম, “পড়ি আর নাই পড়ি তাতে কিছু আসে যায় না, কিন্তু আসল কথাটা হচ্ছে"- আসল কথাটা আর হাতড়ে পাই নে। অচিরা দয়া করে ধরিয়ে দিলে, “আসল কথা উনি নিশ্চিত জানেন, কাল যদি তোমার ওখানে নেমন্তান্ন জোটে তা হলে ওঁর পাতে পশুপক্ষী স্থাবরজঙ্গম কিছুই বাদ যাবে না। তাই অত নিশ্চিন্তু মনে বিলিতি বেগুনের নামকীর্তন করলেন। দাদু, তুমি সবাইকে অত্যন্ত বেশি বিশ্বাস কর, এমনকি, আমাকেও । সেইজন্যেই ঠাট্টা করে তোমাকে কিছু বলতে সাহস হয় না।” কথা বলতে বলতে ধীরে ধীরে ওঁদের বাড়ির দিকে এগিয়ে চলেছি। এমন সময় অচিরা হঠাৎ আমাকে বলে উঠল, “বাস আর নয়- এইবার যান বাসায় ফিরে ।” আমি বললুম, “দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেব।” অচিরা বললে, “সর্বনাশ, দরজা পেরলেই আলুথালু উচ্চুম্বলতা আমাদের দুজনের সম্মিলিত রচনা। আপনি অবজ্ঞা করে বলবেন বাঙালি মেয়েরা অগোছালো। একটু সময় দিন, কাল দেখলে মনে হবে শ্বেতদ্বীপের থেতভুজার অপূর্ব কীর্তি, মেমসাহেবী সৃষ্টি।” অধ্যাপক কিছু কুষ্ঠিত হয়ে আমাকে বললেন, “আপনি কিছু মনে করবেন না-দিদি বড়ো বেশি কথা কচ্ছে। কিন্তু ওটা ওর স্বভাব নয় মোটে। এখানে অত্যন্ত নির্জন, তাই ও আমার মনের ফাক ভরে রেখে দেয় কথা কয়ে। সেটা ওর অভ্যোস হয়ে যাচ্ছে। ও যখন চুপ করে থাকে ঘরটা ছমছম করতে থাকে, আমার মনটাও । ও নিজে জানে না সে কথা । আমার ভয় হয় পাছে বাইরের লোকে ওকে ভুল বোঝে।” বুড়োর গলা জড়িয়ে ধরে অচিরা বললে, “বুকুক-না দাদু। অত্যন্ত অনিন্দনীয়া হতে চাই নে, সেটা WOW across. " সুব্যাপক সগৰ্বে বলে উঠলেন, “আমার দিদি কিন্তু কথা বলতে জানে, আমন আর কাউকে দেখি “তুমিও আমার মতো কাউকে দেখ নি, আমিও কাউকে দেখি নি তোমার মতো।” আমি বললুম, “আচাৰ্যদেব, আজ বিদায় নেবার পূর্বে আমাকে একটা কথা দিতে হবে।” "आश (क्श।”