পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

OSO রবীন্দ্র-রচনাবলী “আপনি যতবার আমাকে আপনি বলেন, আমি মনে মনে ততবার জিভ কাটি । আমাকে দয়া করে তুমি বলে যদি ডাকেন তা হলে মন সহজে সাড়া দেবে। আপনার নাতনিও সহকারিতা করবেন।” অচিরা দুই হাত নেড়ে বললে, “অসম্ভব, আরো কিছুদিন যাক। সর্বদা দেখাশুনো হতে হতে বড়োলোকের তিলকলাঞ্ছন যখন ঘষা পয়সার মতো পালিশ করা হয়ে যাবে তখন সবই সম্ভব হবে। দাদুর কথা স্বতন্ত্র । আমি বরঞ্চ ওঁকে পড়িয়ে নিই। বলে তো দাদু, তুমি কাল খেতে এসো। দিদি যদি মাছের ঝোলে নুন দিতে ভোলে মুখ না বেঁকিয়ে বােলো, কী চমৎকার। বােলো সবটা আমারই পাতে DB BBS DDD BBLB LLLL S SB 0 S SLLL DTO LODB S অধ্যাপক সস্নেহে আমার কাধে হাত দিয়ে বললেন, “ভাই, তুমি বুঝতে পারবে না। আসলে এই মেয়েটি লাজুক তাই যখন আলাপ করা কর্তব্য মনে করে তখন সংকোচ ঠেলে উঠতে গিয়ে কথা বেশি হয়ে পড়ে।” “দেখেছেন ডক্টর সেনগুপ্ত, দাদু আমাকে কী রকম মধুর করে শাসন করেন । অনায়াসে বলতে পারতেন, তুমি বড়ো মুখরা, তোমার বকুনি অসহ্য । আপনি কিন্তু আমাকে ডিফেন্ড করবেন। কী বলবেন বলুন তো ।” “আপনার মুখের সামনে বলব না ।” *{त्रिं कंठद्ध शत्र ?" “আপনি মনে মনেই জানেন ।” “থাক, থাক, তা হলে বলে কাজ নাই। এখন বাড়ি যান।” আমি বললুম, “তার আগে সব কথাটা শেষ করে নিই। কাল আপনাদের ওখানে আমার নেমস্তন্নটা নামকর্তন-অনুষ্ঠানের । কাল থেকে নবীনামাধব নামটা থেকে কাটা পড়বে ডাক্তার সেনগুপ্ত। সূর্যের কাছাকাছি এলে ধূমকেতুর কেতুটাি পায় লোপ, মুণ্ডুটা থাকে বাকি ৷” এইখানে শেষ হল আমার বড়েদিন । দেখলুম বার্থক্যের কী সীেম্যাসুন্দর মূর্তি। পালিশ-করা লাঠি হাতে, গলায় শুভ্ৰ পাটকরা চাদর, ধুতি যত্নে কেঁচানো, গায়ে তসরের জামা, মাথায় শুভ্ৰ চুল বিরল হয়ে এসেছে কিন্তু পরিপটি করে আঁচড়ানো। স্পষ্ট বোঝা যায়, নাতনির হাতের শিল্পকাৰ্য ঐরিবেশভূষণে ঐর দিনযাত্রায় । অতিলালনের অত্যাচার ইনি সস্নেহে সহ্য করেন, খুশি রাখবার জন্যে নাতনিটিকে । এই গল্পের পক্ষে অধ্যাপকের ব্যাবহারিক নাম অনিলকুমার সরকার। তিনি গত জেনেরেশনের কেমব্রিজের বড়ো পদবীধারী। মাস আষ্টেক আগে কোনো কলেজের অধ্যক্ষপদ ত্যাগ করে এখানকার এস্টেটের একটা পোড়ো বাড়ি ভাড়া নিয়ে নিজের খরচে সেটা বাসযোগ্য করেছেন । অন্তপর্ব আমার গল্পের আদিপর্ব হল শেষ । ছোটো গল্পের আদি ও অন্তের মাঝখানে বিশেষ একটা ছেদ थाक ना- ९न्न आकृठिफ्नो (शोल । অচিরার সঙ্গে আমার অপরিচয়ের ব্যবধান ক্ষয় হয়ে আসছে। কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে যেন পরিচয়টাই ব্যবধান । কাছাকাছি আসছি বটে। কিন্তু তাতে একটা প্ৰতিঘাত জাগছে। কেন ? অচিরার প্রতি আমার ভালোবাসা ওর কাছে স্পষ্ট হয়ে আসছে, অপরাধ কি তারই মধ্যে । কিংবা আমার দিকে ওর সৌহৃদ্য ফুটতর হয়ে উঠছে, সেইটােতেই ওর গ্লানি। কে জানে। সেদিন চড়িভাতি তনিকা নদীর তীরে । অচিরা ডাক দিলে, “ডাক্তার সেনগুপ্ত ।” আমি বললুম, “সেই প্রাণীটার কােনো ঠিকানা নেই, সুতরাং কােনাে জবাব মিলবে না।" “আচ্ছা, তা হলে নবীনবাবু।”