পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিপিকা S) R& ७qक नि মনে পড়ছে। সেই দুপুরবেলাটি । ক্ষণে ক্ষণে বৃষ্টিধারা ক্লান্ত হয়ে আসে, আবার দমকা হাওয়া তাকে Rò638J CefCr | ঘরে অন্ধকার, কাজে মন যায় না। যন্ত্রটা হাতে নিয়ে বর্ষার গানে মল্লারের সুর লাগালেম । পাশের ঘর থেকে একবার সে কেবল দুয়ার পর্যন্ত এল । আবার ফিরে গেল। আবার একবার বাইরে এসে দাঁড়াল। তার পরে ধীরে ধীরে ভিতরে এসে বসল। হাতে তার সেলাইয়ের কাজ ছিল, মাথা নিচু করে সেলাই করতে লাগল। তার পরে সেলাই বন্ধ করে জানলার বাইরে ঝাপসা গাছগুলোর দিকে চেয়ে রইল । বৃষ্টি ধরে এল, আমার গান থামল। সে উঠে চুল বঁধতে গেল। " এইটুকু ছাড়া আর কিছুই না। বৃষ্টিতে গানেতে অকাজে আঁধারে জড়ানো কেবল সেই একটি দুপুরবেলা । ইতিহাসে রাজাবাদশার কথা, যুদ্ধবিগ্রহের কাহিনী, সন্তা হয়ে ছড়াছড়ি যায় । কিন্তু একটি দুপুরবেলার ছোটাে একটু কথার টুকরো দুর্লভ রক্সের মতো কালের কীেটাের মধ্যে লুকোনো রইল, দুটি লোক তার খবর জানে । 3926 yOSVe কৃতীয় শোক ভোরবেলায় সে বিদায় নিলে । আমার মন আমাকে বোঝাতে বসলে, “সবই মায়া ।” আমি রাগ করে বললেম, “এই তো টেবিলে সেলাইয়ের বাক্স, ছাতে ফুলগাছের টব, খাটের উপর নাম-লেখা হাতপাখাখিনি- সবই তো সত্য ।” মন বললে, “তবু ভেবে দেখো-” আমি বললেম, “থামো তুমি। ঐ দেখো-না গল্পের বইখানি, মাঝের পাতায় একটি চুলের কাটা, সবটা পড়া শেষ হয় নি ; ঐও যদি মায়া হয়, সে এর চেয়েও বেশি মায়া হল কেন ।” মনচুপ করলে। বন্ধু এসে বললেন, “যা ভালো তা সত্য, তা কখনো যায় না ; সমস্ত জগৎ তাকে রত্বের মতো বুকের হারে গেঁথে রাখে।” আমি রাগ করে বললেম, “কী করে জানলে। দেহ কি ভালো নয়। সে দেহ গেল কোনখানে ৷” ছোটাে ছেলে যেমন রাগ করে মাকে মারে তেমনি করেই বিশ্বে আমার যা-কিছু আশ্ৰয় সমস্তকেই মারতে লাগলেম । বললেম, “সংসার বিশ্বাসঘাতক ৷” হঠাৎ চমকে উঠলেম। মনে হল কে বললে, “অকৃতজ্ঞ!!” জানলার বাইরে দেখি ঝাউগাছের আড়ালে তৃতীয়ার চাঁদ উঠছে, যে গেছে যেন তারই হাসির লুকচুরি । তারা-ছিটিয়ে-দেওয়া অন্ধকারের ভিতর থেকে একটি ভৎসনা এল, “ধরা দিয়েছিলেম সেটাই কি ফাঁকি, আর আড়াল পড়েছে, এইটােকেই এত জোরে বিশ্বাস ?” Δ. कर्डिंक »७२७