পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

08 S রবীন্দ্র-রচনাবলী বনের পথ দিয়ে কে চলেছে, তার নবীন বয়েস। চূড়ায় তার বনফুলের মালা। হাতে তার ডালি ; তাতে শালুক ফুল, তাতে বনের ফল, তাতে খেতের শাখা। ছত্ৰধারিণীকে শুধোলেম, “কোন ভাগ্যবতীর ছেলে পথ আলো করেছে।” ছত্রাধারিণী বললে, 'জান না ? ঐ তো দুয়োরানীর ছেলে। ওর মার জন্যে নিয়ে চলেছে শালুক ফুল, বনের ফল, খেতের শাখ । তার পরে ঘরে ফিরে একলা বসে আছি, মুখে কথা নেই। রাজা এসে বললে, “তোমার কী হয়েছে, কী চাই।” আমি বললেম, “আমার বড়ো সাধ, রোজ খাব শালুক ফুল, বনের ফল, খেতের শাক ; আমার ছেলে নিজের হাতে তুলে আনবে।" রাজা বললে, “আচ্ছ বেশ, তার আর ভাবন কী।' সোনার পালঙ্কে বসে আছি, ছেলে ডালি নিয়ে এল। তার সর্বাঙ্গে ঘাম, তার মুখে রাগ। ডালি পড়ে ब्रश्न, जछों (oनभ । তার পরে আমার কী হল কী জানি । একলা বসে থাকি, মুখে কথা নেই। রাজা রোজ এসে আমাকে শুধোয়, “তোমার কী হয়েছে, কী be সুয়োরানী হয়েও কী চাই সে কথা লজ্জায় কাউকে বলতে পারি নে। তাই তোমাকে ডেকেছি, স্যাঙাৎনি। আমার শেষ কথাটি বলি তোমার কানে, “ঐ দুয়োরানীর দুঃখ আমি চাই।” স্যাঙাৎনি গালে হাত দিয়ে বললে, “কেন বলে তো ।” সুয়োরানী বললে, “ওর ঐ বঁাশের বঁশিতে সুর বাজল, কিন্তু আমার সোনার বঁশি কেবল বয়েই বেড়ালেম, আগলে বেড়ালেম, বাজাতে পারলেম না ।” আশ্বিন ১৩২৭ বিদূষক কাষ্ঠীর রাজা কৰ্ণটি জয় করতে গেলেন। তিনি হলেন জয়ী। চন্দনে, হাতির দাঁতে, আর সোনা-মানিকে शडि (यादों झूल । দেশে ফেরবার পথে বলেশ্বরীর মন্দির বলির রক্তে ভাসিয়ে দিয়ে রাজা পুজো দিলেন। পুজো দিয়ে চলে আসছেন- গায়ে রক্তব্বত্র, গলায় জবার মালা, কপালে রক্তচন্দনের তিলক ; সঙ্গে কেবল মন্ত্রী আর বিদূষক । এক জায়গায় দেখলেন, পথের ধারে আমবাগানে ছেলেরা খেলা করছে। রাজা তার দুই সঙ্গীকে বললেন, “দেখে আসি, ওরা কী খেলছে।” R ছেলেরা দুই সারি পুতুল সাজিয়ে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলছে। রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “কার সঙ্গে কার যুদ্ধ।” তারা বললে, “কৰ্ণাটের সঙ্গে কান্ধীর ।”