8SR রবীন্দ্র-রচনাবলী ও বললে, কথাটা শেষ করে নিই। একখানা গা খুঁজে খুঁজে বেড়ালুম গায়ে গাঁয়ে। কেলা তখন তিন পহর। যতই রোদে বেড়াই কিছুতেই রোদে পুড়ে সারা হচ্ছি নে, এই দুঃখটা যখন অসহ্য এমন সময় দেখি, আমাদের পাতু খুড়ো মুচিখোলার বটগাছতলায় গাজা খেয়ে শিবনেত্র। মনে হল, তার প্রাণপুরুষটা বিন্দু হয়ে ব্ৰহ্মতালুর চুড়ায় এসে জোনাক-পোকার মতো মিটমিটু করছে। বুঝলুম, হয়েছে সুযোগ। নাকের গর্ত দিয়ে আত্মারামকে ঠেসে চালিয়ে দিলুম তার দেহের মধ্যে, নতুন নাগরা জুতোর ভিতরে যেমন করে পাটা ঠেসে উজতে হয়। সেইপিয়ে উঠে ভাঙা গলায় বলে উঠল, কে তুমি বাবা, ভিতরে জায়গা হবে না। তখন তার গলাটা পেয়েছি দখলে বললুম, তোমার হবে না জায়গা, আমার হবে। বেরোও তুমি । সে গো ষ্টো করতে করতে বললে, অনেকখানি বেরিয়েছি, একটু বাকি । ঠেলা মারো। দিলুম ঠেলা, হুস করে গেল বেরিয়ে । , এ দিকে পাতু খুড়োর গিরি এসে বললে, বলি, ও পোড়ারমুখো। কান জুড়িয়ে গেল। বললুম, বলো বলো, আবার বলে, বড়ো মিষ্টি লাগছে, এমন ডাক যে আবার কোনোদিন শুনতে পাব এমন আশই ছিল না। : বুড়ি ভাবলে ঠাট্টা করছি, বঁটা আনতে গেল। ঘরের মধ্যে। ভয় হল, পড়ে-পাওয়া দেহটা খোয়াই বুঝি। বাসায় এসে আয়নাতে মুখ দেখলুম, সমস্ত শরীর উঠল। শিউরে। ইচ্ছে করল র্যাদা দিয়ে মুখটাকে দুলে নিই। গা-হারার গা এল, কিন্তু চেহারা-হারার চেহারাখানা সাত বঁাও জলের তলায়, তাকে ফিরে পাবার কী \ჭო]]{ | ঠিক এই সময়ে দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর খিদেটাকে পাওয়া গেল। একেবারে জঠর জুড়ে । সব কটা নাড়ী টো টো করে উঠেছে এক সঙ্গে । চোখে দেখতে পাই নে পেটের জ্বালায়। যাকে পাই তাকে খাই গোছের অবস্থা । উঃ, কী আনন্দ । মনে পড়ল, তোমার ঘরে পুপূদিদির নেমন্তয় । রেলভাড়ার পয়সা নেই। হেঁটে চলতে শুরু করলুম। চলার অসম্ভব মেহমতে কী যে আরাম সে আর কী বলব। ক্ষুর্তিতে একেবারে গলদঘর্ম। এক এক পা ফেলছি। আর মনে মনে বলছি, থামছি নে, থামছি নে, চলছি তো চলছিই। এমন বেদম চলা জীবনে কখনো হয় নি। দাদা, পুরো একখানা গা নিয়ে বসে আছ কেদারায়, বুঝতেই পার না শু ওমলা। এই কষ্ট বুঝতে পারা যায় আৰ বটে, গুণ কৰে আহি বােলে আন পেরে আমি বললুম, সব বুঝলুম, এখন কী করতে চাও বলে । করবার দায় তোমারই, নেমন্তয় করেছিলো, খাওয়াতে হবে, সে কথা ভুললে চলবে না। রাত এখন তিনটে সে কথা তুমিও ভুললে চলবে না। তা হলে চললুম পুত্বপূদিদির কাছে। 'Kiss দাদা, ভয় দেখােচ্ছ মিছে, মরার বাড়া গাল নেই। চললুম। : क्झािंड३ ना । সে বললে, যাবই। আমি বললুম, কেমন যাও দেখব । সে বলতে লাগল, যাবই, যাবই, যাৰাই । আমার টেবিলের উপর চড়ে নাচতে নাচতে বললে, যাবই, যাবই, যাবই। শেষকালে পাচলির সুর লাগিয়ে গাইতে লাগল, যাবই, যাবই যাবই। আর থাকতে পারলুম না। ধরলাম ওর লম্বা চুলের খুঁটি। টানাটানিতে গা থেকে, টিলে মোজার মতো, দেহটা সরাসরি করে খসে ধাপ করে পড়ে গেল।
