পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q 88Ꮼ. শুক বলছে, আমি এবার উড়ব। সারী বলছে, কোথায় উড়বে। শুক বলছে, যেখানে কোথাও বলে কিছুই নেই, কেবল ওড়াই আছে ; তুমিও চলে আমার সঙ্গে । সারা বললে, আমি ভালোবাসি। এই বনকে ; এখানে ডালে জড়িয়ে উঠেছে বুমকো লতা, এখানে ফুল আছে বটের, এখানে শিমূলের ফুল যখন ফোটে তখন কাকের সঙ্গে ঝগড়া করে ভালো লাগে তার খেতে ; এখানে রাত্তিরে জোনাকিতে ছেয়ে যায় ঐ কামরাঙার ঝোপ, আর বাদলায় বৃষ্টি যখন করতে থাকে তখন দুলতে থাকে নারকেলের ডাল ঝরঝর শব্দ করে- আর, তোমার আকাশে কীই বা আছে । শুক বললে, আমার আকাশে আছে সকাল, আছে সন্ধে, আছে মাঝরাত্রের তারা, আছে দক্ষিনে হাওয়ার যাওয়া আসা, আর আছে কিছুই না- কিছুই না- কিছুই না । সুকুমার জিগেস করলে, কিছুই-না থাকে কী করে, দাদু। সেই কথাই তো এইমাত্র। সারী জিগেস করলে শুককে । শুক কী বলছে । শুক বলছে, আকাশের সব চেয়ে অমূল্যধন ঐ কিছুই না। ঐ কিছুই-না আমাকে ডাক দেয় ভোরের বেলায় । ওরই জন্যে আমার মন কেমন করে যখন বনের মধ্যে বাসা বাধি। ঐ কিছুই-না কেবল খেলা করে রঙের খেলা নীল আঙিনায় ; মাঘের শেষে আমের বোলের নিমন্ত্রণ-চিঠিগুলি ঐ কিছুই-নার ওড়না বেয়ে হু হু করে উড়ে আসে, মীেমাছিরা খবর পেয়ে চঞ্চল হয়ে ওঠে । উৎসাহে সুকুমার লাভ দিয়ে দাঁড়িয়ে উঠল ; বললে, আমার পক্ষীরাজকে ঐ কিছুই-নার রাস্তা नि:ाई (डा प्राब्लाऊ शत । নিশ্চয়ই । পুপুদিদির হিরণব্যাপারটা আগাগোড়াই ঐ কিছুই-নার তেপান্তরে । সুকুমার হাত মুঠো করে বললে, সেইখান দিয়েই আমি তাকে ফিরিয়ে আনব, নিশ্চয় আনব । বুঝতে পারছ তো, পুপুদিদি ?- রাজপুত্র তৈরিই আছে, তোমাকে উদ্ধার করতে দেরি হবে না। এতক্ষণে ছাদের উপরে তার ঘোড়াটা একবার পাখা * ছ, আবার বন্ধ করছে । তুমি খুব বাজিয়ে উঠে বললে, দরকার নেই। বল কী, এত বড়ো বিপদ থেকে তোমার উদ্ধার হল না, আর আমরা নিশ্চিন্তু থাকিব ? शt t( ऐछ् । 2न् शब्दः । শুনলে না ? একটু আগেই ঘণ্টাকর্ণ এসে আমাকে ফিরিয়ে দিয়ে গেল । কীখন ঘটল এটা । ঐ-যে, ঢঙ ঢঙে করে দিলে নটা বাজিয়ে । কোন জাতের ঘণ্টাকর্ণ। হিংস্ৰ জাতের। এখন ইস্কুলে যাবার সময় এগিয়ে আসছে। বিচ্ছিরি লেগেছে আওয়াজটা । গল্পটা অকালে গেল ভেঙে। দুসর রাজপুত্ত্বর খুঁজে বের করা উচিত ছিল। এ তো অঙ্কের হরণ পূরণ নয়- ওরকম ক্লাস-পেরোনো ছেলে তেপান্তর পেরোবার স্পর্ধা করবে, এ তুমি কিছুতেই সইতে পারলে না। আমি মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলুম, লাখখানেক ঝিঝি পোকা আমদানি করব আমাদের পানাপুকুরের ধারের স্যাওড়াবন থেকে । তারা চান্দামামার নিদমহলের পশ্চিম দিকের খিড়কির দরজা দিয়ে ঝাকে ঝাকে ঢুকে সবাই মিলে তোমার বিছানার চাদরটাতে দিত টান সুড়সুড়ি করে। তার উপরে তোমাকে নামিয়ে আনত । তাদের বিক্সি বিবি শব্দে চান্দনি-চকে ঝিমিয়ে পড়ত টাদের পাহারাওয়ালা । সমস্ত রাস্তায় বায়না দিয়ে রেখেছিলুম জোনাকির আলোধারীর দলকে । বঁাশতলার বাকী গালি দিয়ে তোমাকে নিয়ে চলত, খসি খসি শব্দ করত ঝরে-পড়া শুকনো পাতাগুলো। ঝর কার করতে থাকত নারকেলের ডাল । গন্ধে-ভুরি-ডুর সর্ষেখেতের আল বেয়ে যখন এসে পড়তে তিরপূর্নির ঘাটে তখন ধামা-ভরা বিন্নিধানের খই নিয়ে ডাক দিতুম গঙ্গামায়ের উড়তোলা মকরকে, তোমাকে চড়িয়ে দিতেম M. M.