পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q 88ዒ বেসুরের দুঃসহ জোর। একেবারে ডাইনামাইট। বন্দসুরের ভিতর থেকে ছাড়া পেয়েছে দুৰ্জয় বেগ, উড়ে গিয়েছে পাড়ার ঘুম, দৌড় দিয়েছে পাড়ার শান্তি, পালাই-পালাই রব উঠেছে চার দিকে। প্রচণ্ড আসুরিক শক্তি। এর ধাক্কা একদিন টের পেয়েছিলেন স্বর্গের ভালো-মানুষরা। বসে বসে আধ চােখ বুজে অমৃত খাচ্ছিলেন । গন্ধৰ্ব ওস্তাদের তন্ত্ররা ঘাড়ে অতি নিখুঁত স্বরে তান লাগাচ্ছিলেন পরজ-বসন্তে, আর নুপুরঝংকারিণী অঙ্গরীরা নিপুণ তালে তেহাই দিয়ে নৃত্য জমিয়েছিলেন। এ দিকে মৃত্যুবরণ নীল অন্ধকারে তিন যুগ ধরে অসুরের দল রসাতল-কোঠায় তিমিমাছের লেজের ঝাপটায় বেলায়ে বেসুর সাধনা করছিল। অবশেষে একদিন শনিতে কলিতে মিলে দিলে সিগনাল, এসে পড়ল বেসুর-সংগীতের কালাপাহাড়ের দল সুরওয়ালাদের সমে-নাড়া-দেওয়া ঘাড়ে হুংকার ক্ৰেংকার ঝন ঝনকার ধুমকার দুডুমকার গড়-গড়গড়ৎকার শব্দে । তীব্র বেসুরের তেলেবেগুনি জ্বলনে পিতামহ-পিতামহ ডাক ছেড়ে তঁরা লুকোলেন ব্ৰহ্মাণীর অন্দরমহলে। তোমাকে বলব কী আর, তোমার তো জানা আছে সকল শাস্ত্ৰই । জানা যে নেই আজ তা বোঝা গেল। তোমার কথা শুনে । দাদা, তোমাদের বই-পড়া বিদ্যে, আসল খবর কানে পৌঁছয় না। আমি ঘুরে বেড়াই শ্মশানে মশানে, গৃঢ়তত্ত্ব পাই সাধকদের কাছ থেকে । আমার উৎকটদন্তী গুরুর মুখকন্দর থেকে বেসুরতত্ত্ব অল্প কিছু জেনেছিলুম, তার পায়ে অনেকদিন ভেরেণ্ডার বিরোচক তৈল মর্দন করে। বেসুরতত্ত্ব আয়ত্ত করতে তোমার বিলম্ব হয় নি সেটা বুঝতে পারছি। অধিকারভেদ মানি আমি । দাদা, ঐ তো আমার গর্বের কথা । পুরুষ হয়ে জন্মালেই পুরুষ হয় না, পরুিষতার প্রতিভা থাকা চাই । একদিন আমার গুরুর অতি অপূর্ব বিশ্ৰীমুখ থেকে গুরুমুখকে আমরা বলে থাকি শ্ৰীমুখ, তুমি বললে বিশ্ৰীমুখ ! গুরুর আদেশ । তিনি বলেন, শ্ৰীমুখটা নিতান্ত মেয়েলি, বিশ্ৰী মুখেই পুরুষের গৌরব । ওর জোরটা আকর্ষণের নয়, বিপ্ৰকর্ষণের । মােন কি না । भन्न6ऊ 6य शऊऊश| वाक्षा शम्, (म भ6न दिक् । মধুর রসে তোমার মীেতাত পাকা হয়ে গেছে দাদা, কঠোর সত্য মুখে রোচে না, ভাঙতে হবে তোমাদের দুর্বলতা- মিঠে সুরে যার নাম দিয়েছ সুরুচি, বিশ্ৰীকে সহ্য করবার শক্তি নেই। যার । দুর্বলতা ভাঙা সবলতা ভাঙার চেয়ে অনেক শক্ত । বিশ্ৰীতত্ত্বর গুরুবাক্য শোনাতে চাচ্ছিলে, শুনিয়ে Vጣ€ | একেবারে আদিপর্ব থেকে গুরু আরম্ভ করলেন ব্যাখ্যান । বললেন, মানব সৃষ্টির শুরুতে চতুর্মুখ তার সামনের দিকের দাড়ি-কামানো দুটো মুখ থেকে মিহি সুর বের করলেন। কোমল রেখাব থেকে মধুর ধারার মসৃণ মিড়ের উপর দিয়ে পিছলে গড়িয়ে এল কোমল নিখাদ পর্যন্ত । সেই সুকুমার স্বরলহরী প্ৰত্যুষের অরুণবৰ্ণ মেঘের থেকে প্রতিফলিত হয়ে অত্যন্ত আরামের দোল লাগালো অতিশয় মিঠে হাওয়ায় । তারই মৃদু হিল্লোলে দোলায়িত নৃত্যচ্ছদে রূপ নিয়ে দেখা দিল নারী। স্বৰ্গে শাখ বাজাতে লাগলেন বরুণদেবের ঘরানী । বরুণদেবের ঘরানী কেন । তিনি যে জলদেবী । নারী জাতটা বিশুদ্ধ জলীয় ; তার কাঠিন্য নেই, চাঞ্চল্য আছে, চঞ্চল করেও । ভূব্যবস্থার গোড়াতেই জলরাশি । সেই জলে পানকৌড়ির পিঠে চড়ে যত সব নারী ভেসে বেড়াতে লাগল সারিগান গাইতে গাইতে । অতি চমৎকার। কিন্তু, তখন পানকৌড়ির সৃষ্টি হয়েছে না কি । হয়েছে বৈকি। পাখিদের গলাতেই প্ৰথম সুর বাধা চলছিল। দুর্বলতার সঙ্গেই মাধুর্যের অনবচ্ছিন্ন যোগ, এই তত্ত্বটির প্রথম পরীক্ষা হল ঐ দুর্বল জীবগুলির ডানায় এবং কষ্ঠে । একটা কথা বলি, রাগ RSG at a F G (5. T: |