পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ԿՇ রবীন্দ্র-রচনাবলী করছে- তেমনি একদিন হয়তো এমন একটা বিদ্যুতের খেলা খেলাবে যে ইচ্ছে করলে একজন আর-একজনের মধ্যে মিলে যেতে পারবে । অসম্ভব নয়। কিন্তু, তুমি তা হলে কী করবে। কিছুই লুকোতে পারবে না। সর্বনাশ ! সব মানুষেরই যে লুকোবার আছে অনেক । লুকোনো আছে বলেই লুকোবার আছে। যদি কারও কিছুই লুকোনো না থাকত তা হলে দেখা-বিনতি খেলার মতো সবার সব জেনেই লোকব্যবহার হত । কিন্তু, লজ্জার কথা যে অনেক আছে । লজার কথা সকলেরই প্ৰকাশ হলো লজার ধারা চলে যেত । আচ্ছা, আমার কথা কী বলতে যাচ্ছিলে তুমি । সেদিন আমি তোমাকে জিগেস করেছিলুম, তুমি যদি সত্যযুগে জন্মাতে। তবে আপনাকে কী হয়ে দেখতে তোমার ইচ্ছে হত । তুমি ফস করে বলে ফেললে, কাবুলি বেড়াল। পূপে মন্ত ক্ষাপা হয়ে বলে উঠল, কখখনো না। তুমি বানিয়ে বলছি। আমার সত্যযুগটা আমার বানানো হতে পারে। কিন্তু তোমার মুখের কথাটা তোমারই। ওটা ফস করে আমি-হেন বাচালও বানাতে পারতুম না । এর থেকে তুমি কি মনে করেছিলে আমি খুব বোকা । এই মনে করেছিলুম যে, কাবুলি বেড়ালের উপর অত্যন্ত লোভ করেছিলে অথচ কাবুলি বেড়াল পাবার পথ তোমার ছিল না, তোমার বাবা বেড়াল জন্তুটাকে দেখতে পারতেন না । আমার মতে সত্যযুগে বেড়াল কিনতেও হত না, পেতেও হত না, ইচ্ছে করলেই বেড়াল হতে পারা যেত । মানুষ ছিলুম, বেড়াল হলুম- এতে কী সুবিধেটা হল । তার চেয়ে যে বেড়াল কেনাও ভালো, না কিনতে পারলে না পাওয়া ভালো । ঐ দেখো, সত্যযুগের মহিমাটা মনে ধারণা করতে পারছি না। সত্যযুগের পূপে আপনার সীমানা বাড়িয়ে দিত বেড়ালের মধ্যে। সীমানা লোপ করত না । তুমি তুমিও থাকতে, বেড়ালও হতে । (VO2QS q-JK K5QIS (KP(NI AQR QR | সত্যযুগের ভাষায় মানে আছে। সেদিন তো তোমাদের অধ্যাপক প্রমথবাবুর কাছে শুনেছিলে, আলোকের অণুপরমাণু বৃষ্টির মতো কণাবর্ষণও বটে আবার নদীর মতো তরঙ্গধারাও বটে। আমাদের সাধারণ বুদ্ধিতে বুঝি, হয় এটা নয় ওটা ; কিন্তু বিজ্ঞানের বুদ্ধিতে একই কালে দুটােকেই মেনে নেয় । তেমনি একই কালে তুমি পুপুও বটে, বেড়ালও বটে- এটা সত্যযুগের কথা । দাদামশায়, যতই তোমার বয়স এগিয়ে চলছে ততই তোমার কথাগুলো অবোধ্য হয়ে উঠছে, তোমার কবিতারই মতো । অবশেষে সম্পূর্ণ নীরব হয়ে যাব তারই পূর্বলক্ষণ । সেদিনকার কথাটা কি ঐ কাবুলি বেড়ালের পরে আর এগোল না। এগিয়েছিল। সুকুমার এক কোণে বসে ছিল, সে স্বপ্নে কথা বলার মতো বলে উঠল, আমার ইচ্ছে করে শালগাছ হয়ে দেখতে । সুকুমারকে উপহাসিত করবার সুযোগ পেলে তুমি খুশি হতে । ও শালগাছ হতে চায় শুনে তুমি তো হেসে অস্থির , ও চমকে উঠল। লাজায়। কাজেই ও বেচারির পক্ষ নিয়ে আমি বললেম- দক্ষিণের হাওয়া দিল কোথা থেকে, গাছটার ডাল ছেয়ে গেল ফুলে, ওর মজার ভিতর দিয়ে কী মায়ামক্সের অদৃশ্য প্রবাহ বয়ে যায় যাতে ঐ রাপের গন্ধের ভোজবাজি চলতে থাকে। ভিতরের থেকে সেই আবেগটা জানতে ইচ্ছা করে বৈকি ! গাছ না হতে পারলে বসন্তে গাছের সেই অপরিমিত রোমাঞ্চ अनुख्य कझद शै कान्न । আমার কথা শুনে সুকুমার উৎসাহিত হয়ে উঠল ; বললে, আমার শোবার ঘরের জানলা থেকে যে