পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ԳԵ রবীন্দ্র-রচনাবলী আমি বললুম, ওর ঘরকন্না ঘুরতে ঘুরতে চলবে না, তিড়িংবিড়িং করে লাফাতে লাফাতে চলবে কুসমি বললে, এতক্ষণে বুঝলুম, এ লোকটার কলমই বা হারায় কেন, এক-পাট চটিই বা পাওয়া যায় না কেন, আর তুমিই বা কেন ঔকে এত ভালোবাস। যত পাগলের উপরে তোমার ভালোবাস আর তারাই তোমার চার দিকে এসে জোটে । দেখো দিদি, সবশেষে তোমাকে একটা কথা বলে রাখি। তুমি ভাবছি, নীলু। লক্ষ্মীছাড়াকে নিয়ে তোমার বউদি রেগেই আছেন। গোপনে তোমাকে জানাচ্ছি- একেবারে তার উল্টো । ওর এই এলোমেলো আলুথালু ভাব দেখেই তিনি মুগ্ধ। আমারও সেই দশা । 毒 鼎 পাঁচটা না বাজতেই ভুলুরাম শৰ্মা সে টেরিটি বাজারে গেল মনিবের ফরমাশে । মরেছে অতুল মামা, আজি তারি শ্রাদ্ধের জোগাড় করতে হবে নানাবিধ খাদ্যের । বাবু বলে, ভুলো না হে, আরো চাই দরমা। ভোলা কি সহজ কথা, বলে ভুলুশৰ্মা । কঁকরোলকিনে বসে কঁচকলা কিনতে । শাকআলু কচু কিনা পারে না সে চিনতে । বকুনি খেয়েছে যেই মাছওলা মিনাসের, তাড়াতাড়ি কিনে বসে কামরাঙা তিন সের। বাবু বলে, কামরাঙা এতগুলো হবে কী । ভুলু বলে, কানে আমি শুনি নাই। তবে কি । দেখলেম কিনছে যে ও পাড়ার সরকার, বুঝলেম নিশ্চয় আছে। এর দরকার। কানে ওঁজে নিয়ে তার হিসাবের লেখনী বাবু বলে, ফিরে দিয়ে এসো তুমি এখনি । মনিবের হুকুমটা শুনল সেই করে, ফিরে দিতে চলে গেল কিছু দেরি না করে। বললে সে, দোকানিকে যা করেছি। জব্দফলগুলো ফিরে নিতে করেনিটু শব্দ। বাবু কয় টাকা কই টান দিয়ে তামাকে । ভুলু বলে, সে কথাটা বলনি তো আমাকে । এসেছি উজাড় করে বাজারের কুড়িটাদোকানির মাসি ছিল, হেসে খুন বুড়িটা।