পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s by भJख्रिक्रिशन কসমি বললে, আচ্ছা দাদামশায়, শুনেছি। এক সময়ে তুমি বড়ো বড়ো কথা নিয়ে খুব বড়ো বড়ো বই লিখেছিলে । জীবনে অনেক দুষ্কর্ম করেছি, তা কবুল করতে হবে। ভারতচন্দ্ৰ বলেছেন, সে কহে বিস্তুর মিছা যে কহে বিস্তর । আমার ভালো লাগে না মনে করতে যে, আমি তোমার সময় নষ্ট করে দিচ্ছি। ভাগ্যবান মানুষেরই যোগ্য লোক জোটে সময় নষ্ট করে দেবার । আমি বুঝি তোমার সেই যোগ্য লোক ? আমার কপালক্রমে পেয়েছি, খুঁজলে পাওয়া যায় না। তোমাকে খুব ছেলেমানুষি করাই ? দেখে, অনেকদিন ধরে আমি গভীর পোশাকি সাজ পরে এতদিন কাটিয়েছি, সেলাম পেয়েছি অনেক ! এখন তোমার দরবারে এসে ছেলেমানুষির ঢিলে কাপড় পরে ইপি ছেড়েছি । সময় নষ্ট করার কথা বলছি, দিদি- এক সময় তার হুকুম ছিল না। তখন ছিলুম সময়ের গোলাম। আজ আমি গোলামিতে ইস্তফা দিয়েছি। শেষের কটা দিন আরামে কাটবে। ছেলেমানুষির দোসর পেয়ে লম্বা কেদারায় পা ছড়িয়ে বসেছি। যা খুশি বলে যাব, মাথা চুলকে কারও কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে না। তোমার এই ছেলেমানুষির নেশাতেই তুমি যা খুশি তাই বানিয়ে বলছি। কী বানিয়েছি বলে । যেমন তোমাদের ঐ হ. চি. হাঁ ; আমনতরো অদ্ভূত খ্যাপাটে মানুষ তো আমি দেখি নি । দেখা দিদি, এক-একটা জীব জন্মায় যার কাঠামোটা হঠাৎ যায় বেঁকে । সে হয় মিউজিয়মের মালা ; ঐ হােত চ - হ , আমার মিউজিয়ামে দিয়েছেন ধরা । ওকে পেয়ে তুমি খুব খুশি হয়েছিলে ? তা হয়েছিলুম। কেননা তখন তোমার ইরুমসি গিয়েছেন চলে শ্বশুরবাড়ি । আমাকে অবাক করে দেবার লোকের অভাব ঘটেছিল । ঠিক সেই সময় এসেছিলেন হরীশচন্দ্ৰ হালদার একমাথা টাক নিয়ে ; তার তাক লাগিয়ে দেবার রকমটা ছিল আলাদা, তোমার ইরুমসির উল্টো । সেদিন তোমার কিমসি শুরু করেছিল জটাইবুড়ির কথা। ঐ জটাই বুড়ির সঙ্গে অমাবস্যার রাত্রে আলাপ পরিচয় * অ ! সে বুড়িটার কাজ ছিল চাদে বসে। চরকা কাটা । সে চরকা বেশিদিন আর চলল। না । ঠিক এমন সময় পালা জমাতে এলেন প্রোফেসর হরীশ হালদার । নামের গোড়ার পদবীটা তার নিজের হাতেই লাগানাে। তার ছিল মাজিক-দেখানাে হাত। একদিন বাদলা দিনের সন্ধেবেলায় চায়ের সঙ্গে সঁড়ভাজা খাওয়ার পর তিনি বলে বসলেন, এমন ম্যাজিক আছে যাতে সামনের ঐ দেয়ালগুলো হয়ে ধবৈ ফাকা । ” পঞ্চানন দাদা টাকে হাত বুলোতে বুলোতে বললেন, এ বিদ্যে ছিল বটে। ঋষিদের জানা। শুনে প্রোফেসার রেগে টেবিল চাপড়ে বললেন, আরো রেখে দিন আপনার মুনি ঋষি, দৈত্য দানা, (2R পঞ্চানন দাদা বললেন, আপনি তবে কী মানেন । ইরািশ একটিমাত্র ছোটাে কথায় বলে দিলেন, দ্রব্যগুণ । আমরা ব্যস্ত হয়ে বললুম, সে জিনিসটা কী । প্রোফেসার বলে উঠলেন, আর যাই হােক, বানানো কথা নয়, মন্তর নয়, তন্তর নয়, বোকা-ভুলোনো আজগুবি কথা নয় ।