পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Gły R রবীন্দ্র-রচনাবলী ছেলেমানুযি খিচুড়ি । তাতে না ছিল নুন, না ছিল ঘি, না ছিল কোনোপ্রকার মসলার বালাই। কোনোমতে আধ্যসিদ্ধ হলে খেতে লেগে যৌতুম। মনে হয় নি ভোজের মধ্যের্শনিদের কিছু ছিল। এই গোলাবাড়ির পাচিল ঘেঁষে গোটাকতক বাখ্যারি জোগাড় করে হ, চি. হ, আমাদের বিখ্যাত নাট্যকার নানা আয়তনের খবরের কাগজ পুরে জুড়ে একটা স্টেজ খাড়া করেছিলেন। স্টেজ শব্দটা মনে করেই আমাদের বুক ফুলে উঠত। এই স্টেজে আমাকে সাজতে হবে মুক্ত কুন্তলা। সব কথা স্পষ্ট মনে নেই, কিন্তু হতভাগিনী মুক্ত কুন্তলার দুঃখের দশা কিছু কিছু মনে পড়ে। এইটুকু জানি, তিনি তলোয়ার হাতে বীরপুরুষের সঙ্গে যোগ দিতে গিয়েছিলেন ঘোড়ায় চড়ে। কিন্তু, ঘোড়াটা যে কার সাজাবার কথা ছিল সে ঠিক মনে আনতে পারছি নে। যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে বীরলালন যে স্বদেশের জন্যে প্ৰাণ দিয়েছিলেন, তাতে সন্দেহ নেই। র্তার বুকে যখন বর্শা (পাতকাঠি) বিদ্ধ হল, যখন মাটিতে র্তার মুক্তকুম্ভল। লুটিয়ে পড়ছে, রণদুর্ধর্ষ পাশে এসে দাড়ালেন। বীরাঙ্গনা বললেন, বীরবর, আমাকে এখন বিদায় দাও, হয়তো স্বগে গিয়ে দেখা হবে । আহা, আবার হাততালির পালা । অভিনয়ের জোগাড়যন্ত্র মোটামুটি একরকম হয়ে এসেছিল। হরীশচন্দ্ৰ কোথা থেকে এনেছিলেন নানা রকমের পরচুলো গোফদাড়ি। বউদিদির হাতে পায়ে ধরে দুটাে-একটা শাড়িও জোগাড় করেছিলুম। তার কোটা থেকে সিঁদুর নিয়ে সিথেয় পরিবার সময় কোনো ভাবনা মনে আসে নি। স্কুলে যাবার সময় ভুলেছিলুম তার দাগ মুছতে। ছেলেদের মধ্যে মস্ত হাসি উঠেছিল। কিছুদিন আমার ক্লাসে মুখ দেখাবার জো রইল না। নাটকের অভিনয়ে সবচেয়ে ফল দেখা গেল এই হাসিতে। আর, বাকিটুকু হয়ে গেল একেবারে ফাকি । যেখানে আমাদের স্টেজের বাখ্যারি পোতা হয়েছিল ঠিক সেই জায়গায় সেজদাদা কুস্তির আখড়া পত্তন করলেন । মুক্ত কুন্তলার সবচেয়ে দুঃখের দশা হল যুদ্ধক্ষেত্র নয়, এই কুস্তির আড্ডায় । রণদুর্ধর্ষকে মিহি গলায় বলবার সুযোগ পেলেন না, হে বীরবর, স্বর্গে তোমার সঙ্গে হয়তো দেখা হবে। তার বদলে বলতে হল, সাড়ে নটা বাজল, স্কুলের গাড়ি তৈরি । এর থেকেই বুঝবে, আমরা যখন ছেলেমানুষ ছিলেম। সে ছিলেম খাটি ছেলেমানুষ । 事 罹 皋 ‘দাদা হব ছিল বিষম শিখতখন বয়স বারো হবে, কড়া হয়নি ত্বক । স্টেজ বেঁধেছি। ঘরের কোণে, বুক ফুলিয়ে ক্ষণে ক্ষণে झशछिन गालाद्ध उडिन ; কাঠের তরবারি মেরে দাড়ি-পরা বিপক্ষেরে বারে বারেই করেছিলুম জয় । আজ খসেছে মুখোশটা সে, আরেক লড়াই চরি৷ পাশে মারহি কিছু অনেক খাচ্ছি মার। দিন চলেছে অবিরত, vejo o uro, বোলো-আনা নয়। সে অহংকার ।