পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ngge রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী ঠেলিয়া-তুলিয়া ইচ্ছিত জায়গাটিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করিতেও আমি পারি না। তা ছাড়া ইংরেজি ভাষার সদর দরজার চাবিটা আমার হাতে নাই ; আমাকে কেবলই বেড়া ডিঙাইয়া চলিতে হয়তেমন করিয়া পথ চলা একটা ব্যায়াম, তেমনভাবে আপনার স্বভাবকে রক্ষা করিয়া, চলা যায় না । নিজেকে অবাধে পরিচিত করিবার শক্তি না থাকিলে অন্যের সহজ পরিচয় পাওয়া সম্ভবপর হয় না। সুতরাং কিছুকাল এখানকার মোটর-গাড়ির দানবরথের চাকা বঁাচাইবার চেষ্টীয় শ্ৰান্ত হইয়া অবশেষে এখানকার পথ হইতেই ফিরিতাম, আমার সেই নদী-বাহুপাশেঘেরা বাংলাদেশের শরৎরেীন্দ্রালোকিত আমন-ধানের খেতের ধারে । এমন সময় প্রবেশ করিলেন বন্ধু, পর্দা তুলিয়া দিলেন। দেখিলাম আসন পাতা, দেখিলাম আলো জ্বলিতেছে ; বিদেশীর অপরিচয়ের মন্ত বোঝাটা বাহিরে রাখিয়া, পথিকের ধূলিলিপ্ত বেশ ছাড়িয়া ফেলিয়া, এক মুহুর্তেই ভিড়ের মধ্য হইতে নিভৃতে আসিয়া প্রবেশ করিলাম। কবি য়েটস ভিড়ের মাঝখানেও কবি য়েটস’ চাপা পড়েন না, তাহাকে একজন বিশেষ কেহ বলিয়া চেনা যায়। যেমন তিনি তাহার দীর্ঘ শরীর লইয়া মাথায় প্রায় সকলকে ছাড়াইয়া গিয়াছেন, তেমনি তাহাকে দেখিলে মনে হয়, ইহার যেন সকল বিষয়ে একটা প্ৰাচুৰ্য আছে, এক জায়গায় সৃষ্টিকর্তার সৃজনশক্তির বেগ প্রবল হইয়া ইহাকে যেন ফোয়ারার মতো চারি দিকের সমতলতা হইতে বিপুলভাবে উচ্ছসিত করিয়া তুলিয়াছে। সেইজন্য দেহে মনে প্ৰাণে ইহাকে এমন অজস্ৰ বলিয়া বোধ হয়। ইংলন্ডের বর্তমান কালের কবিদের কাব্য যখন পড়িয়া দেখি তখন ইহাদের অনেককেই আমার মনে হয়, ইহারা বিশ্বজগতের কবি নহেন । ইহারা সাহিত্যজগতের কবি । এ দেশে অনেকদিন হইতে কাব্যসাহিত্যের সৃষ্টি চলিতেছে, হইতে হইতে কাব্যের ভাবা উপমা অলংকার ভালী বিস্তর জমিয়া উঠিয়াছে। শেষকালে এমন হইয়া উঠিয়াছে যে, কবিত্বের জন্য কাব্যের মূল প্রস্রবণে মানুষের না গেলেও চলে। কবিরা যেন ওস্তাদ হইয়া উঠিয়াছে ; অর্থাৎ, প্ৰাণ হইতে গান করিবার প্রয়োজনবোধই তাহদের চলিয়া গিয়াছে, এখন কেবল গান হইতেই গানের উৎপত্তি চলিতেছে। যখন ব্যথা হইতে কথা আসে না, কথা হইতেই কথা আসে, তখন কথার কারুকার্য ক্রমশ জটিল ও নিপুণতর হইয়া উঠিতে থাকে ; আবেগ তখন প্রত্যক্ষ ও গভীর ভাবে হৃদয়ের সামগ্ৰী না হওয়াতে সে সরল হয় না ; সে আপনাকে আপনি বিশ্বাস করে না বলিয়াই বলপূর্বক অতিশয়ের দিকে ছুটিতে থাকে ; নবীনতা মুদ্ধি নয় বলিয়াই আপনার অপূর্বত্য প্রমাণের জন্য কােই তাহাক অণুতের সন্ধান ईथे । ওয়ার্ডসওয়ার্থের সঙ্গে সুইনবর্নের তুলনা করিয়া দেখিলেই আমার কথাটা বোঝা সহজ হইবে। র্যাহারা জগতের কবি নহেন, কবিত্বের কবি, সুইনবার্ন ঠাহীদের মধ্যে প্রতিভায় অগ্রগণ্য। কথার নৃত্যলীলায় ইহার এমন অসাধারণ নৈপুণ্য যে, তাহারই আনন্দ তাহকে মাতোয়ারা করিয়াছে। DDiSBOBDD BDD DBDB BDBD DD DuBD DBDB BBDBD DBB BBBLD DBD গাথিয়াছেন ; সে-সমন্ত আশ্চৰ্য কীৰ্তি, কিন্তু বিশ্বের উপর তাহার প্রশান্ত প্ৰতিষ্ঠা নহে। বিশ্বের সঙ্গে হৃদয়ের প্রত্যক্ষ সংঘাতে ওয়ার্ডসওয়ার্থের কাব্যসংগীত বাজিয়া উঠিয়ছিল। এইজন্য তাহা এমন সরল। সরল বলিয়া সহজ নহে। পাঠকেরা সহজে তাহা গ্ৰহণ করে নাই। কবি যেখানে প্রত্যক্ষ অনুভূতি হইতে কাব্য লেখেন সেখানে তাহার লেখা গাছের ফুলফলের মতো। আপনি সম্পূর্ণ হইয়া বিকাশ পায় । সে আপনাকে ব্যাখ্যা করে না ; অথবা নিজেকে মনোরম বা হৃদয়ঙ্গম করিয়া » vos fo Gloo (W.B.Yeats)