পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ps Ruby সমস্ত দেশ ঘুড়িয়া পাড়ির দল বসিয়া থাকা সত্ত্বেও নিদারুণ দস্যবৃত্তি ও কসাইক্তি করতে রাষ্ট্রনৈতিক অধিনায়কের লেশমাত্র সংকোচ বোধ হয় না;ষ্ঠাহাদের সেই পুণ্যজ্যোতিনাই যাহার সম্মুখে এই সকল বিরাট পাপের কলঙ্ককালিমা সর্বসমক্ষে বীভৎসরূপে উদঘাটিত হয়। সংগীত আমরা গ্ৰীষ্ম-ঋতুর অবসানের দিকে এ দেশে আসিয়া পৌঁছিয়ছি, এখন এখানে সংগীতের আসর ভাঙিবার মুখে । কোনো বড়ো ওস্তাদের গান বা বাজনার বৈঠক এখন আর নাই। এখানকার নিকুঞ্জে গ্ৰীষ্মকালে পাখিরা নানা সমুদ্র পার হইয়া আসে, আবার তাহারা সভা ভঙ্গ করিয়া চলিয়া যায়। মানুষের ংগীতও এখানে সকল ঋতুতে বাজে না ; তাহার বিশেষ কাল আছে, সেই সময়ে পৃথিবীর নানা ওস্তাদ নানা দিক হইতে আসিয়া এখানে সংগীতসরস্বতীর পূজা করিয়া থাকে। আমাদের দেশেও একদিন এইরূপ গীতবাদ্যের পরব ছিল। পূজাপার্বণের সময় বড়ো বড়ো ধনীদের বাড়িতে নানা দেশের গুণীরা আসিয়া জুটিত । সেই সকল সংগীতসভায় দেশের সাধারণ লোকের প্রবেশ অবারিত ছিল । তখন লক্ষ্মী সরস্বতী একত্র মিলিতেন এবং সংগীতের বসন্তসমীরণ সমস্ত দেশের হৃদয়ের উপর দিয়া প্রবাহিত হইত। সকল দেশেই একদিন বুনিয়াদি ধনীরাই দেশের শিল্প সাহিত্য সংগীতকে আশ্রয় দিয়া রক্ষা করিয়াছে। যুরোপে এখন গণসাধারণ সেই বুনিয়াদি বংশের স্থান অধিকার করিয়াছে ; আমাদের দেশে বারোয়ারি-দ্বারা যেটা ঘটিয়া থাকে সেইটে য়ুরোপের সর্বত্র ব্যাপ্ত হইয়া পড়িয়ছে। বারোয়ারিই এখানে ওস্তাদ আনাইয়া গান শোনে ; বারোয়ারির কৃপাতেই নিরন্ন কবির দৈন্য মোচন হয়, এবং চিত্রকর ছবি আঁকিয়া লক্ষ্মীর প্রসাদ লাভ করে। কিন্তু, আমাদের দেশে বর্তমান কালে ধনীদের ধানের কোনো দায়িত্ব নাই ; সে ধনের দ্বারা কেবল ল্যাজারাস অসলার । হ্যামিলটন হারমান এবং মাকিন্টশ-বারান কোম্পানিরই মুনাফা বৃদ্ধি হইয়া থাকে ; এ দিকে গণসাধারণেরও না আছে শক্তি, না আছে রুচি ; আমাদের দেশে কলাবধূকে লক্ষ্মীও ত্যাগ করিয়াছেন, গণেশের ঘরেও এখনো তাহার স্থান হয় নাই । আমার ভাগ্যক্রমে এবারে আমি লণ্ডনে আসার কয়েক সপ্তাহ পরেই ক্রিস্টল-প্যালাসের গীতশালায় হ্যাণ্ডেল-উৎসবের আয়োজন হইয়াছিল। প্রসিদ্ধ সংগীতরচয়িতা হ্যাণ্ডেল জর্মান ছিলেন, কিন্তু ইংলেণ্ডেই তিনি অধিকাংশ জীবন যাপন করিয়াছিলেন । বাইবেলে কোনো কোনো অংশ ইনি সুরে বসাইয়াছিলেন, সেগুলি এ দেশে বিশেষ আদর পাইয়াছে। এই গীতগুলিই বহুশত যন্ত্ৰযোগে বহু শত কণ্ঠে মিলিয়া হ্যাণ্ডেল-উৎসবে গাওয়া হইয়া থাকে। চারি হাজার যন্ত্রী ও গায়কে মিলিয়া এবারকার উৎসব সম্পন্ন হইয়াছিল । এই উৎসবে আমি উপস্থিত ছিলাম। বিরাট সভাগৃহের গ্যালারিতে স্তরে স্তরে গায়ক ও বাদক বসিয়া গিয়াছে। এত বৃহৎ ব্যাপার যে দূরবীনের সাহায্য ব্যতীত স্পষ্ট করিয়া কাহাকেও দেখা যায় না, মনে হয় যেন পূজা পুত্র মানুষের মেঘ করিয়াছে। স্ত্রী ও পুরুষ গায়কেরা উদারা মুদারা ও তারা সুরের কণ্ঠ অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীতে বসিয়াছে। একই রঙের একই রকমের কাপড় ; সবসুদ্ধ মনে হয়, প্রকাণ্ড একটা পটের উপর কে যেন লাইনে লাইনে পশমের বুনানি করিয়া গিয়াছে। EB BDD C LBuBD BDD D DDB DBL BBD DBS BO DDB BDSS D হাজার সুরের ধারা নৃত্য করিতে করিতে একসঙ্গে বাহির হইল, তাহারা কেহ কাহাকেও আঘাত করিল। নী । অথচ সমতান নহে, বিচিত্র তানের বিপুল সন্মিলন। এই বহুবিচিত্রকে এমনতরো অনিন্দনীয় সুসম্পূর্ণতায় এক করিয়া তুলিবার মধ্যে যে একটা বৃহৎ শক্তি আছে, আমি তাঁহাই অনুভব করিয়া Rমিত হইয়া গেলাম। এত বড়ো বৃহৎ ক্ষেত্রে অন্তরে বাহিরে এই জাগ্ৰত শক্তির কোথাও কিছুমাত্র Am A na -