পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী وا 8 لا পড়ে অন্ধকার আঙিনায়। বুক হুবছর করছে, মনের মধ্যে ঝিলিক দিচ্ছে বিজুলি, ফেনিয়ে ফেনিয়ে ঢেউ উঠছে যে-সমুদ্রে তার পার দেখি নে । মা ! এখনো ভেবে দেখ। মাঝখানে তো আংকে উঠবি নে ভয়ে ? ধৈর্য থাকবে তোর ? মন্ত্রের বেগ চ'ড়ে যাবে যখন, হঠাৎ ঠেকাতে গেলে আমার প্রাণ বেরিয়ে যাবে। জলবার জিনিস সমস্ত যাবে ছাই হয়ে, তবে নিববে আগুন, এই কথাটা মনে রাখিল । প্রকৃতি । তুই ডরছিস কার জন্তে । সে কি তেমনি মানুষ। কিছুতে কিছু হবে না তার— শেষ পর্যন্তই অস্থিক সে চলে, আগুনের পথ মাড়িয়ে মাড়িয়ে । আমি মনের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি, সামনে প্রলয়ের রাত্রি, মিলনের ঝড়, ভাঙনের আনন্দ । গান হৃদয়ে মন্দ্রিল ডমরু গুরুগুরু, ঘন মেঘের ভুকু, কুটিল কুঞ্চিত, হল রোমাঞ্চিত বন বনাস্তর ; দুলিল চঞ্চল বক্ষোহিন্দোলে মিলনস্বপ্নে সে কোন অতিথি রে । সঘন-বর্ষণ-শব্দ-মুখরিত বজ্ৰসচকিত ভ্রস্ত শর্বরী, মালতীবল্লরী কাপায় পল্লব করুণ কল্পোলে, কানন শঙ্কিত ঝিল্লিঝংকৃত । দ্বিতীয় দৃশ্য প্রকৃতি । বুক ফেটে যাবে! আমি দেখব না আয়ন, দেখতে পারব না। কী ভয়ংকর দ্বাখের ঘূর্ণিঝড়। বনস্পতি শেষকালে কি মড়মড় করে লুটোৰে ধুলো, অভ্ৰভেদী গৌরব তার পড়বে ভেঙে ? মা। দেখ, বাছ, এখনো যদি বলিস, ফিরিয়ে আনবার চেষ্টা করি আমার মন্ত্রকে । তাতে আমার নাড়ী ছিড়ে যায় যদি, যার নিজের প্রাণ, গেও ভালো, কিন্তু ঐ মহাপ্রাণ রক্ষে পাক ।