পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

이한5 ఇఅt স্বাভাবিক এবং অসাধারণ সেটা সকলেই মানিয়া লইতে লাগিল । কেজো সাহিত্যের বই এবং কাগজে আমার শেলফ, এবং টেবিল ভরিয়া উঠিল। বাড়ি-মেরামত, ইলেকটিক আলো ও পাখার কৌশল, কোন জিনিসের কত দর, বাজারদর ওঠাপড়ার গুঢ়তত্ব, এক্সচেঞ্জের রহস্ত, প্ল্যান, এষ্টিমেট প্রভৃতি বিদ্যায় আসর জমাইবার মতো ওস্তাদি আমি একরকম মারিয়া লইয়াছিলাম । কিন্তু অহরহ কাজের কথা বলি অথচ কিছুতে কোনো কাজেই নামি না, এমনভাবে অনেকদিন কাটিল । আমার ভক্তরা যখনই আমাকে কোনো-একটা স্বদেশী কোম্পানিতে যোগ দিবার প্রস্তাব করিত আমি বুঝাইয়া দিতাম, যতগুলা কারবার চলিতেছে কোনোটার কাজের ধারা বিশুদ্ধ নহে, সকলেরই মধ্যে গলদ বিস্তর— তা ছাড়া, সততা বঁাচাইয়া চলিতে হইলে ওদের কাছে ঘোলিবার যো নাই । সততার লাগামে একটুআধটু ঢিল না দিলে ব্যাবসা চলে না, এমন কথা আমার কোনো বন্ধু বলাতে তার সঙ্গে আমার ছাড়াছাড়ি হইয়া গেছে । মৃত্যুকাল পর্যন্ত সর্বাঙ্গমুন্দর প্ল্যান এষ্টিমেন্টু এবং প্রস্পেক্টস লিথিয়া আমার যশ অক্ষুন্ন রাখিতে পারিতাম । কিন্তু বিধির বিপাকে প্ল্যান করা ছাড়িয়া কাজ করায় লাগিলাম। এক তো পিতার মৃত্যু হওয়াতে আমার ঘাড়েই সংসারের দায় চাপিল ; তার পরে আর-এক উপসর্গ আসিয়া জুটিল, সে কথাও বলিতেছি । প্রসন্ন বলিয়া একটি ছেলে আমার সঙ্গে পড়িত। সে ধেমন মুখর তেমনি নিন্দুক । আমাদের পৈতৃক সততার খ্যাতিটাকে লইয়া খোচা দিবার সে ভারি স্থযোগ পাইয়াছিল। বাবা আমার নাম দিয়াছিলেন সত্যধন । প্রসন্ন আমাদের দারিদ্র্য লক্ষ্য করিয়া বলিত, “বাবা দিবার বেলা দিলেন মিথ্যাধন, আর নামের বেলা দিলেন সত্যধন, তার চেয়ে ধনটাকে সত্য দিয়া নামটাকে মিথ্যা দিলে লোকসান হইত না।” প্রসল্পর মুখটাকে বড়ো ভয় করিতাম । অনেকদিন তার দেখাই ছিল না। ইতিমধ্যে সে বর্ময় লুধিয়ানায়ু শ্রীরঙ্গপত্তনে নানা রকম-বেরকমের কাজ করিয়া আসিয়াছে । সে হঠাৎ কলিকাতায় আসিয়া আমাকে পাইয়া বসিল । যার ঠাট্টাকে চিরদিন ভয় করিয়া আসিয়াছি, তার শ্রদ্ধা পাওয়া কি কম আরাম ! প্রসন্ন কছিল, “ভাই, আমার এই কথা রইল, দেখে নিয়ে, একদিন তুমি যদি দ্বিতীয় মতি শীল বা দুর্গাচরণ লা’ না হও তবে আমি বউবাজারের মোড় হইতে বাগবাজারের মোড় পর্যন্ত বরাবর সমানে নাকে খত দিতে রাজি আছি।” প্রসন্ধর মুখে এত বড়ো কথাটা যে কতই বড়ো, তাহা প্রসন্নর সঙ্গে ধারা এক ক্লালে २७|>b- 電