পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী "לרא শেষের রাত্রি “মালি - “ঘুমোও, যতীন, রাত হল ষে।” “হোক-না রাত, আমার দিন তো বেশি নেই। আমি বলছিলুম, মণিকে তার বাপের বাড়ি— ভুলে যাচ্ছি, ওর বাপ এখন কোথায়—” “সীতারামপুরে।”

  • হা সীতারামপুরে । সেইখানে মণিকে পাঠিয়ে দাও, আরও কতদিন ও রোগীর সেবা করবে । ওর শরীর তো তেমন শক্ত নয় ।”

“শোনো একবার । এই অবস্থায় তোমাকে ফেলে বউ বাপের বাড়ি যেতে চাইবেই বা কেন ।”

  • ডাক্তারেরা কী বলেছে সে কথা কি সে—”
  • ত। সে নাই জানল— চোখে তো দেখতে পাচ্ছে । সেদিন বাপের বাড়ি যাবার কথা যেমন একটু ইশারায় বলা অমনি বউ কেঁদে অস্থির ।”

মালির এই কথাটার মধ্যে সত্যের কিছু অপলাপ ছিল, সে কথা বলা আবশ্যক । মণির সঙ্গে সেদিন তার এই প্রসঙ্গে যে আলাপ হইয়াছিল সেটা নিম্নলিখিত-মতো । “বউ, তোমার বাপের বাড়ি থেকে কিছু খবর এসেছে বুঝি ? তোমার জাঠততো ভাই অনাথকে দেখলুম যেন । “ই, মা ব’লে পাঠিয়েছেন, আসছে শুক্রবারে আমার ছোটো বোনের অন্নপ্রাশন । ऊाझे डांवक्केि-” “বেশ তো বাছ, একগাছি সোনার হার পাঠিয়ে দাও, তোমার মা খুশি হবেন।” * ভাবছি, আমি যাব । আমার ছোটে। বোনকে তো দেখি নি, দেখতে ইচ্ছে করে।” *সে কী কথা, যতীনকে একলা ফেলে বাবে ? ডাক্তার কী বলেছে শুনেছ তো ?” “ডাক্তার তো ৰলছিল, এখনো তেমন বিশেষ—” “ত যাই বলুক, ওর এই দশা দেখে যাবে কী ক’রে।” “আমার তিন ভাইয়ের পরে এই একটি বোন, বড়ো আদরের মেয়ে— শুনেছি, ধুম ক’রে অন্নপ্রাশন হবে – আমি না গেলে মা ভারি—” “তোমার মায়ের ভাব, বাছা, আমি বুঝতে পারি নে। কিন্তু যতীনের এই সময়ে তুমি যদি যাও, তোমার বাবা রাগ করবেন, সে আমি বলে রাখছি।”