পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵ՞8 রবীন্দ্র-রচনাবলী

  • সে কী কথা। কার সঙ্গে যাবে।” *অনাথ নিয়ে যাচ্ছে ।” “লক্ষ্মী মা আমার, তুমি যেয়ে, আমি তোমাকে বারণ করব না, কিন্তু আজ নয়।” *টিকিট কিনে গাড়ি রিজার্ড করা হয়ে গেছে।” “ত হোক, ও লোকসান গায়ে সইবে— তুমি কাল সকালেই চলে যেয়ো— আজ যেয়ে না।”
  • মাসি, আমি তোমাদের তিথি বার মানি নে, আজ গেলে দোষ কী ।” “ধউীন তোমাকে ডেকেছে, তোমার সঙ্গে তার একটু কথা আছে।” “বেশ তো, এখনো একটু সময় আছে, আমি তাকে বলে আসছি।” “ন, তুমি বলতে পারবে না যে যাচ্ছ।” “তা বেশ, কিছু বলব না, কিন্তু আমি দেরি করতে পারব না। কালই অন্নপ্রাশন— আজ যদি না যাই তো চলবে না।”

“আমি জোড়হাত করছি, বউ, আমার কথা আজ একদিনের মতো রাখে। আজ মন একটু শাস্ত করে যতীনের কাছে এসে বসো— তাড়াতাড়ি কোরো না।”

  • তা, কী করব বলো, গাড়ি তো আমার জন্যে বসে থাকবে না। অনাথ চলে গেছে— দশ মিনিট পরেই সে এসে আমাকে নিয়ে যাবে। এই বেলা তার সঙ্গে দেখা সেরে আলি গে।”

“না, তবে থাকৃ– তুমি যাও। এমন করে তার কাছে যেতে দেব না। ওরে অভাগিনী, তুই যাকে এত দুঃখ দিলি সে তো সব বিসর্জন দিয়ে আজ বাদে কাল চলে যাবে— কিন্তু যত দিন বেঁচে থাকবি এ দিনের কথা তোকে চিরদিন মনে রাখতে হবে— ভগবান আছেন, ভগবান আছেন, সে কথা একদিন বুঝবি ।” “মালি, তুমি অমন ক’রে শাপ দিয়ে না বলছি।” *ওরে বাপ রে, আর কেন বেঁচে আছিস রে বাপ । পাপের যে শেষ নেই– আমি আর ঠেকিয়ে রাখতে পারলুম না।” মালি একটু দেরি করিয়া রোগীর ঘরে গেলেন। আশা করিলেন, যতীন ঘুমাইয়া পড়িবে। কিন্তু ঘরে ঢুকিতেই দেখিলেন, বিছানার উপর যতীন নড়িয়া-চড়িয়া উঠিল । মাসি বলিলেন, “এই এক কাণ্ড ক'রে বসেছে।”

  • কী হয়েছে। মণি এল না ? এত দেরি করলে কেন, মাসি।” “গিয়ে দেখি, সে তোমার দুধ জাল দিতে গিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছে বলে কান্না। আমি