পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যের পথে । éԵ 4 নিয়ে যায় ; সেখানে পায়ে হেঁটে যাওয়া যায় না, সেখানে যাবার পথ কেউ চোখে দেখে নি । একটু বেশি কবিত্ব লাগছে ? শ্রোতারা মনে ভাবছেন, বাড়াবাড়ি হচ্ছে । একটু বুঝিয়ে বলবার চেষ্টা করা যাক। আমাদের মন ধে জ্ঞানরাজ্যে বিচরণ করে সেট দুইমুখে। পদার্থ, তার একটা দিক হচ্ছে তথ্য, আর-একটা দিক হচ্ছে সত্য। যেমনটি আছে তেমনটির ভাব হচ্ছে তথ্য ; সেই তথ্য যাকে অবলম্বন ক’রে থাকে সেই হচ্ছে সত্য । 劇 আমার ব্যক্তিরূপটি হচ্ছে আমাতে বদ্ধ আমি । এই-যে তথ্যটি এ অন্ধকারবাসী, এ স্থাপনাকে আপনি প্রকাশ করতে পারে না। যখনই এর পরিচয় কেউ জিজ্ঞাসা করবে তখনই একটি বড়ো সত্যের দ্বারা এর পরিচয় দিতে হবে, যে সত্যকে সে আশ্রয় করে আছে। বলতে হবে, আমি বাঙালি । কিন্তু, বাঙালি কী। ও তো একটা অবচ্ছিন্ন পদার্থ, ধরা যায় না, ছোওয়া যায় না। ত হোক, ঐ ব্যাপক সত্যের দ্বারাই তথ্যের পরিচয় । তথ্য খণ্ডিত, স্বতন্ত্ৰ— সত্যের মধ্যে সে আপন বৃহৎ ঐক্যকে প্রকাশ করে । আমি ব্যক্তিগত আমি এই তথ্যটুকুর মধ্যে, আমি মানুষ এই সত্যটিকে যখন আমি প্রকাশ করি তখনই বিরাট একের আলোকে আমি নিত্যতায় উদ্ভাসিত হই। তথ্যের মধ্যে সত্যের প্রকাশই হচ্ছে প্রকাশ । যেহেতু সাহিত্য ও ললিতকলার কাজই হচ্ছে প্রকাশ, এইজন্তে তথ্যের পাত্রকে আশ্রয় ক’রে আমাদের মনকে সত্যের স্বাদ দেওয়াই তার প্রধান কাজ । এই স্বাঙ্গটি হচ্ছে একের স্বাদ, অসীমের স্বাদ । আমি ব্যক্তিগত আমি, এটা হল আমার সীমার দিকের কথা; এখানে আমি ব্যাপক একের থেকে বিচ্ছিন্ন। আমি মানুষ, এটা হল আমার অসীমের অভিমুখী কথা ; এখানে আমি বিরাট একের সঙ্গে যুক্ত হয়ে <zकों★मॉन । চিত্রী যখন ছবি আঁকতে বসেন তখন তিনি তথ্যের খবর দেবার কাজে বলেন না। তখন তিনি তথ্যকে ততটুকু মাত্র স্বীকার করেন যতটুকুর দ্বারা তাকে উপলক্ষ্য ক’রে কোনো একটা সুষমার ছন্দ বিশুদ্ধ হয়ে দেখা দেয় । এই ছন্দটি বিশ্বের নিত্যবত্ত ; এই ছন্দের ঐক্যস্থত্রেই তথ্যের মধ্যে আমরা সত্যের আনন্দ পাই । এই বিশ্বছন্দের দ্বারা উদ্ভালিত না হলে তথ্য আমাদের কাছে অকিঞ্চিৎকর । গোধূলিবেলায় একটি বালিকা মন্দির থেকে বাহির হয়ে এল, এই তথ্যটি মাত্র আমাদের কাছে অতি সামান্ত। এই সংবাদমাজের দ্বারা এই ছবিটি আমাদের কাছে উজ্জল হয়ে ওঠে না, আমরা শুনেও শুনি নে ; একটি চিরন্তন এক-রূপে এটি আমাদের