পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 ०२ রবীন্দ্র-রচনাবলী কাঠী-বিষের দরে তার বেচাকেনা চলে, তার ভাড়াও জোটে। তার বাইরে গ্ৰহতারার মেলা যে অখণ্ড আকাশে তার অসীমতার আনন্দ কেবলমাত্র আমার বোধে । জীবলীলার পক্ষে ঐ আকাশটা যে নিতান্তই বাহুল্য, মাটির নিচেকার কীট তারই প্রমাণ দেয়। সংসারে মানবকীটও আছে, আকাশের কৃপণতায় তার গায়ে বাজে না । যেমনটা গরজের সংসারের গরাদের বাইরে পাখা না মেলে বঁাচে না সে-মনটা ওর মরেছে। এই মর্য-মনের মাস্থ্যটারই ভূতের কীর্তন দেখে ভয় পেয়ে কবি চতুরাননের দোহাই পেড়ে বলেছিলেন— অরসিকেষু রসস্ত নিবেদনম্। শিরসি মা লিখ, মা লিখ, মা লিখ। কিন্তু, রূপকথার রাজপুত্রের মন তাজা । তাই নক্ষত্রের নিত্যীপবিভাসিত মহাকাশের মধ্যে যে অনির্বচনীয়তা তাই সে দেখেছিল ঐ রাজকন্যায়। রাজকন্যার সঙ্গে তার ব্যবহারটা এই বোধেরই অনুসারে । অন্যদের ব্যবহার অন্যরকম । ভালোবাসায় রাজকন্যার হৃৎস্পন্দন কোন ছন্দের মাত্রায় চলে তার পরিমাপ করবার জন্তে বৈজ্ঞানিক অভাবপক্ষে একটা টিনের চোঙ ব্যবহার করতে একটুও পীড়া বোধ করেন না। রাজকন্যা নিজের হাতে দুধের থেকে যে নবনী মন্থন ক’রে তোলেন সওদাগরের পুত্র তাকে চৌকো টিনের মধ্যে বদ্ধ ক'রে বড়োবাজারে চালান দিয়ে দিব্য মনের তৃপ্তি পান । কিন্তু, রাজপুত্র ঐ রাজকন্যার জন্তে টিনের বাজুবন্ধ গড়াবার আভাস স্বপ্নে দেখলেও নিশ্চয় দম আটকে ঘেমে উঠবেন । ঘুম থেকে উঠেই সোনা যদি নাও জোটে, অন্তত চাপাকুঁড়ির সন্ধানে তাকে বেরোতেই হবে । এর থেকেই বোঝা যাবে, সাহিত্যতত্ত্বকে অলংকারশাস্ত্র কেন বলা হয়। সেই ভাব, সেই ভাবনা, সেই আবির্ভাব, যাকে প্রকাশ করতে গেলেই অলংকার আপনি আসে, তর্কে যার প্রকাশ নেই, সেই হল সাহিত্যের । অলংকার জিনিসটাই চরমের প্রতিরূপ। মা শিশুর মধ্যে পান রসবোধের চরমতা— র্তার সেই একান্ত বোধটিকে সাজে সজ্জাতেই শিশুর দেহে অসুপ্রকাশিত করে দেন । তৃত্যকে দেখি প্রয়োজনের বাধা সীমানায়, বাধা বেতনেই তার মূল্য শোধ হয়। বন্ধুকে দেখি অসীমে, তাই আপনি জেগে ওঠে ভাষায় অলংকার, কণ্ঠের স্বরে অলংকার, হাসিতে অলংকার, ব্যবহারে অলংকার। সাহিত্যে এই বন্ধুর কথা অলংকৃত বাণীতে । সেই বাণীর সংকেতঝংকারে বাজতে থাকে ‘च्षणम्'- चर्थीं९, ‘बांग, जांच्च कांछ cनहे ।।' এই অলংকৃত বাক্যই হচ্ছে রসাত্মক বাক্য। ইংরেজিতে ধাৰে real বলে, বাংলায় তাকে বলি যথার্থ, অথবা সার্থক। সাধারণ