পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఇరిు রবীন্দ্র-রচনাবলী ওই হার গলায় নিয়ে পুড়ে মরব। আমি তোমাকে বাইরে দেখব বলে পতঙ্গের মতো এ কোন আগুনে ঝাপ দিলুম। আমিও মরি নে, আগুনও নেবে না, এ কী জালা । রাজা । তোমার সাধ তো মিটেছে, আমাকে তো আজ দেখে নিলে । সুদৰ্শন । আমি কি তোমাকে এমন সর্বনাশের মধ্যে দেপতে চেয়েছিলুম ? काँ দেখলুম জানি নে, কিন্তু বুকের মধ্যে এখনও কঁপিছে। রাজা । কেমন দেখলে রানী ? সুদৰ্শন । ভয়ানক, সে ভয়ানক । সে আমার স্মরণ করতেও ভয় হয় । কালো, কালো, তুমি কালো । আমি কেবল মুহূর্তের জন্তে চেয়েছিলুম। তোমার মুখের উপর আগুনের আভা লেগেছিল—আমার মনে হল ধূমকেতু যে-আকাশে উঠেছে সেই আকাশের মতে তুমি কালো—তখনই চোখ বুজে ফেললুম, আর চাইতে পারলুম না। ঝড়ের মেঘের মতো কালো—কুলশূন্ত সমুদ্রের মতে কালো, তারই তুফানের উপরে সন্ধ্যার রক্তিমা । রাজা । আমি তো তোমাকে পূর্বেই বলেছি যে-লোক আগে থাকতে প্রস্থ ত না হয়েছে সে যখন আমাকে হঠাং দেখে সইতে পারে না—আমাকে বিপদ বলে মনে করে আমার কাছ থেকে উর্ধ্বশ্বাসে পালাতে চায়। এমন কতবার দেপেছি । সেইজন্তে সেই দুঃখ থেকে বাচিয়ে ক্রমে ক্রমে তোমার কাছে পরিচয় দিতে চেয়েছিলুম। সুদৰ্শন । কিন্তু পাপ এসে সমস্ত ভেঙে দিলে—এখন আর যে তোমার সঙ্গে তেমন করে পরিচয় হতে পারবে তা মনে করতেও পারি নে । রাজা হবে রানী হবে । যে-কালে দেখে আজ তোমার বুক কেঁপে গেছে সেই কালোতেই একদিন তোমার হৃদয় স্নিগ্ধ হয়ে যাবে। নইলে আমার ভালোবাস কিসের ? গান আমি রূপে তোমায় ভোলাব না ভালোবাসায়ু ভোলাব । আমি হাত দিয়ে দ্বার খুলব না গো গান দিয়ে দ্বার খোলাব । ভরাব না ভূষণ-ভারে সাজাব না ফুলের হারে সোহাগ আমার মালা করে গলায় তোমার পরাব ।