পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের কবিতা ՀԵԳ যথাস্থানে। মেয়েটি গাড়ি থেকে নেমে বললে, “ কাল যদি আপনার সময় থাকে একবার এখানে আসবেন, আমাদের কর্তা-মার সঙ্গে আপনার আলাপ করিয়ে দেব ।” অমিতর ইচ্ছে হল বলে, “আমার সময়ের অভাব নেই, এখনই আসতে পারি।” *সংকোচে বলতে পারলে না । বাড়ি ফিরে এসে ওর নোট-বই নিয়ে লিখতে লাগল : “পথ আজ হঠাং এ কী পাগলামি করলে। দুজনকে দু-জায়গা থেকে ছিড়ে এনে আজ থেকে হয়তো এক রাস্তায় চালান করে দিলে। অ্যাস্ট্রনমার ভুল বলেছে । অজানা আকাশ থেকে চাদ এসে পড়েছিল পৃথিবীর কক্ষপথে,—লাগল তাদের মোটরে মোটরে ধাক্কা, সেই মরণের তাড়নার পর থেকে যুগে যুগে দুজনে একসঙ্গেই চলেছে, এর আলো ওর মূপে পড়ে, ওর আলো এর মূপে চলার বাধন আর ছেড়ে না। মনের ভিতরটা বলছে, আমাদের শুরু হল যুগলচলন, আমরা চলার স্থত্রে গাথব ক্ষণে ক্ষণে কুড়িয়ে-পাওয়া উজ্জল নিমেষগুলির মালা । বাধা মাইনেয় বাধা থোরাকিতে ভাগ্যের দ্বারে পড়ে থাকবার জে৷ রইল না ; আমাদের দেনাপাওনা সবই হবে হঠাং ” বাইরে বৃষ্টি পড়ছে। বারান্দায় ঘন ঘন পায়চারি করতে করতে অমিত মনে মনে বলে উঠল, “কোথায় আছ নিবারণ চক্রবর্তী। এইবার ভর করে আমার পরে, বাণী দাও, বাণী দাও!” বেরোল লম্ব সরু পাতাটা, নিবারণ চক্রবর্তী বলে গেল : পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি, আমরা দুজন চলতি হাওয়ার পন্থী । রঙিন নিমেষ ধুলার দুলাল পরানে ছড়ায় আবীর গুলাল, ওড়না ওড়ায় বর্ষার মেঘে দিগঙ্গনার নৃত্য, হঠাং-আলোর ঝলকানি লেগে ঝলমল করে চিত্ত । নাই আমাদের কনক-চাপার কুঞ্জ, বনবীথিকায় কীর্ণ বকুলপুঞ্জ । হঠাং কখন সন্ধ্যেবেলায় নামহারা ফুল গন্ধ এলায়,