পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵԵ রবীন্দ্র-রচনাবলী প্রভাতবেলায় হেলাভরে করে অরুণ মেঘেরে তুচ্ছ, উদ্ধত যত শাখার শিখরে রডোডেনড্রনগুচ্ছ । মাই আমাদের সঞ্চিত ধনরত্ন, নাই রে ঘরের লালন-ললিত যত্ন । পথপাশে পাখি পুচ্ছ নাচায়, বন্ধন তারে করি না খাচায়, ডান-মেলে-দেওয়া মুক্তিপ্রিয়ের কুজনে দুজনে তৃপ্ত । আমরা চকিত অভাবনীয়ের ক্লচিং কিরণে দীপ্ত । এইখানে একবার পিছন ফের চাই। পশ্চাতের কথাটা সেরে নিতে পারলে গল্পটার সামনে এগোবার বাধা হবে না । পূর্ব ভূমিকা বাংলাদেশে ইংরেজি শিক্ষার প্রথম পর্যায়ে চণ্ডীমণ্ডপের হাওয়ার সঙ্গে স্কুলকলেজের হাওয়ার তাপের বৈষম্য ঘটাতে সমাজবিদ্রোহের যে-ঝড় উঠেছিল সেই ঝড়ের চাঞ্চল্যে ধরা দিয়েছিলেন জ্ঞানদাশংকর । তিনি সেকালের লোক, কিন্তু তার তারিপটা হঠাং পিছলিয়ে সরে এসেছিল অনেকখানি একালে । তিনি আগাম জন্মেছিলেন । বুদ্ধিতে বাক্যে ব্যবহারে তিনি ছিলেন তার বয়সের লোকদের অসমসাময়িক । সমুদ্রের ঢেউবিলাসী পাখির মতো লোকনিন্দার ঝাপট বুক পেতে নিতেই তার আনন্দ ছিল । এমন সকল পিতামহের নাতিরা যখন এই রকম তারিখের বিপর্যয় সংশোধন করতে চেষ্টা করে তখন তারা এক দৌড়ে পৌছোয় পঞ্জিকার একেবারে উলটে দিকের টামিনসে । এ-ক্ষেত্রেও তাই ঘটল। জ্ঞানদাশংকরের নাতি বরদাশংকর বাপের মৃত্যুর পর যুগ-হিসাবে বাপ-পিতামহের প্রায় আদিম পূর্বপুরুষ হয়ে উঠলেন। মনসাকেও হাত জোড় করেন, শীতলাকেও মা বলে ঠাণ্ড করতে চান। মাদুলি ধুয়ে জল পাওয়া শুরু হল ; সহস্ৰ দুর্গানাম লিখতে লিখতে দিনের পূর্বাচু যায় কেটে ; তার এলেকায় যে-বৈশুদল নিজেদের