পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের কবিতা _. ‘Le ථ লাবণ্য বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলে, “আপনি বাংলা কবিতা লেখেন না কি ?” “ভয় হচ্ছে আজ থেকে লিখতে শুরু করব বা । নতুন অমিত রায় কী যে কাণ্ড করে বসবে পুরোনো অমিত রায়ের তা কিছু জানা নেই। হয়তো বা সে এখনই লড়াই *করতে বেরোবে।” jo “লড়াই ? কার সঙ্গে ? “সেইটে ঠিক করতে পারছি নে। কেবলই মনে হচ্ছে খুব মস্ত কিছু একটার জঙ্গে একৃখুনি চোপ বুজে প্রাণ দিয়ে ফেলা উচিত, তার পরে অমুতাপ করতে হয় রয়ে বসে করা যাবে ।” লাবণ্য হেসে বললে, “প্রাণ যদি দিতেই হয় তো সাবধানে দেবেন।” “সে-কথা আমাকে বলা অনাবশ্বক। কমু্যন্তাল রায়টের মধ্যে আমি যেতে নারাজ । মুসলমান বাঢ়িয়ে ইংরেজ বাচিয়ে চলব। যদি দেপি বুড়োমুড়ে গোছের মানুষ, অহিংস্র মেজাজের ধাৰ্মিক চেহারা, শিঙে বাজিয়ে মোটর ইাকিয়ে চলেছে—তার সামনে দাড়িয়ে পথ আটকিয়ে বলব, যুদ্ধং দেহি। ওই যে-লোক অজীর্ণ রোগ সারবার জন্যে হাসপাতালে না গিয়ে এমন পাহাড়ে আসে, পিদে বাড়াবার জন্যে নির্লজ্জ হয়ে হাওয়া পেতে বেরোয় ।” লাবণ্য হেসে বললে, “লোকট। তবু যদি অমান্ত করে চলে যায়।” “তপন আমি পিছন থেকে দু-হাত আকাশে তুলে বলব--এবারকার মতে ক্ষমা করলুম, তুমি আমার ভ্রাতা, আমরা এক ভারতমাতার সন্তান –বুঝতে পারছেন, মন যপম খুব বড়ো হয়ে ওঠে তপন মানুষ যুদ্ধও করে, ক্ষমাও করে ।” লাবণ্য হেসে বললে, “আপনি যপন যুদ্ধের প্রস্তাব করেছিলেন মনে ভয় হয়েছিল, কিন্তু ক্ষমার কথা যে-রকম বোঝালেন তাতে আশ্বস্ত হলুম যে, ভাবনা নেই।” অমিত বললে, “আমার একটা অনুরোধ রাখবেন ?” "কী, বলুন।” “আজ পিদে বাড়াবার জন্তে আর বেশি বেড়াবেন না ।” “আচ্ছা বেশ, তার পরে ?” “ওই নিচে গাছতলায় যেখানে নানা রঙের ছ্যাতলাপড় পাথরটার নিচে দিয়ে একটুপানি জল ঝিরঝির করে বয়ে যাচ্ছে ওইখানে বসবেন আসুন ।” লাবণ্য হাতে-বাধা ঘড়িটার দিকে চেয়ে বললে, “কিন্তু সময় যে অল্প।” “জীবনে সেইটেই তো শোচনীয় সমস্ত, লাবণ্য দেবী, সময় অল্প। মরুপথে সঙ্গে আছে আধ মশক মাত্র জল, যাতে সেটা উছলে উছলে শুকনো ধুলোয় মারা না যায় সেটা