পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের কবিতা ף כיסא নদী যেমন কেবলই তাঁর থেকে সরতে সরতে চলে, তেমনি । আমি কি কেবলই রচনার স্রোত নিয়েই জীবন থেকে সরে সরে যাব ? এইপানেই কি মেয়েপুরুষের ভেদ ? পুরুষ তার সমস্ত শক্তিকে সার্থক করে স্মৃষ্টি করতে, সেই স্মৃষ্টি আপনাকে এগিয়ে দেবার জন্তেই *আপনাকে পদে পদে ভোলে। মেয়ে তার সমস্ত শক্তিকে খাটায় রক্ষা করতে, পুরোনোকে রক্ষা করবার জন্তেই নতুন কৃষ্টিকে সে বাধা দেয়। রক্ষার প্রতি হষ্টি নিষ্ঠুর, কৃষ্টির প্রতি রক্ষা বিয়। এমন কেন হল ? এক জায়গায় এর পরম্পরকে আঘাত করবেই। যেপানে খুব করে মিল, সেইপানেই মন্ত বিরুদ্ধতা । তাই ভাবছি জামাদের সকলের চেয়ে বড়ো যে-পাওনা, সে মিলন নয়, সে মুক্তি। এ-কথাটা ভাবতে অমিতকে পীড়া দিলে, কিন্তু ওর মন এটাকে অস্বীকার করতে পারলে না । موا লাবণ্য-তর্ক যোগমায় বললেন, “ম লাবণ্য, তুমি ঠিক বুঝেছ ?” “ঠিক বুঝেছি, মা ।” “অমিত ভারি চঞ্চল, সে-কথা মানি । সেইজন্যেই ওকে এত স্নেহ করি । দেপে না, ও কেমনতরে এলোমেলে। হাত থেকে সবই যেন পড়ে পড়ে যায়।" লাবণ্য একটু হেসে বললে, “ওঁকে সবই যদি ধরে রাখতেই হত, হাত থেকে সবই যদি পসে পসে না পড়ত তাহলেই ওঁর ঘটত বিপদ । ওঁর নিয়ম হচ্ছে, হয় উনি পেয়েও পাবেন না, নয় উনি পেয়েই হারাবেন । যেটা পাবেন সেটা যে আবার রাপতে হবে এটা ওঁর ধাতের সঙ্গে মেলে না ।” τ, “সত্যি করে বলি, বাছা, ওর ছেলেমাতুষি আমার ভারি ভালো লাগে।” "সেটা হল মায়ের ধর্ম। ছেলেমগুষিতে দায় যত-কিছু সব মায়ের। আর ছেলের য ত-কিছু সব খেলা । কিন্তু আমাকে কেন বলছ, দায় নিতে যে পারে না তার উপরে দায় চাপাতে ?” “দেখছ না, লাবণ্য, ওর আমন দুরন্ত মন, আজকাল অনেকখানি যেন ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। দেখে আমার বড়ো মায়া করে। যাই বল, ও তোমাকে ভালোবাসে ।” "তা বাসেন ।" “তবে আর ভাবনা কিসের ?”