পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২০ রবীন্দ্র-রচনাবলী অনাবশ্ব)ক ভাজ করতে লাগল। যোগমায়া বললেন, “তোমাকে দেপে আমার অনেকবার মনে হয়েছে, অনেক পড়ে, অনেক ভেবে তোমাদের মন বেশি সুন্ন হয়ে গেছে ; তোমরা ভিতরে ভিতরে যে-সব ভাব গড়ে তুলছ আমাদের সংসারটা তার উপযুক্ত নয়। আমাদের সময়ে মনের যে-সব আলো অদৃপ্ত ছিল, তোমরা আজ যেন সেগুলোকেও ছাড়ান দিতে চাও না । তারা দেহের মোট আবরণটাকে ভেদ করে দেহটাকে যেন অগোচর করে দিচ্ছে । আমাদের আমলে মনের মোটা মোটা ভাবগুলো নিয়ে সংসারে সুখদুঃখ যথেষ্ট ছিল—সমস্ত কিছু কম ছিল না। আজ তোমরা এতই বাড়িয়ে তুলছ, কিছুই আর সহজ রাখলে না।” 曾 লাবণ্য একটুখানি হাসলে। এই সেদিন অমিত অদৃষ্ঠা আলোর কথা যোগমায়াকে বোঝাচ্ছিল, তার থেকে এই যুক্তি র্তার মাথায় এসেছে-–এও তো সুন্ম ; যোগমায়ার মঠাকরুন এ-কথা এমন করে বুঝতেন না । বললে, “কৰ্তামা, কালের গতিকে মাহুষের মন যতই স্পষ্ট করে সব কথা বুঝতে পারবে ততই শক্ত করে তার ধাক্কা সইতেও পারবে। অন্ধকারের ভয়, অন্ধকারের দুঃখ অসহ, কেননা সেটা অস্পষ্ট।” যোগমায়া বললেন, “আজ আমার বোধ হচ্ছে কোনোকালে তোমাদের দুজনের দেপা না হলেই ভালো হত ।” “না না, তা ব’লো না । যা হয়েছে এ ছাড়া আর কিছু যে হতে পারত এ আমি মনেও করতে পারি নে। এক সময়ে আমার দৃঢ়বিশ্বাস ছিল যে, আমি নিতাস্তই শুকনো,—কেবল বই পড়ব আর পাস করব এমনি করেই আমার জীবন কাটবে। আজ হঠাং দেগলুম আমিও ভালোবাসতে পারি। আমার জীবনে এমন অসম্ভব যে সম্ভব হল এই আমার ঢের হয়েছে। মনে হয় এতদিন ছায়া ছিলুম, এপন সত্য হয়েছি। এর চেয়ে আর কী চাই । আমাকে বিয়ে করতে ব’লে না, কর্তাম৷ ” বলে চৌকি থেকে মেঝেতে নেমে যোগমায়ার কোলে মাপা রেপে কঁদিতে লাগল । So वांन-दलल গোড়ায় সবাই ঠিক করে রেগেছিল অমিত দিন পনেরোর মধ্যে কলকাতায় ফিরবে। নরেন মিত্তির খুব মোট বাজি রেগেছিল যে, সাত দিন পেরোবে না। এক মাস যায়, দু-মাস যায়, ফেরবার নামও নেই। শিলঙের বাসার মেয়াদ ফুরিয়েছে,—রংপুরের কোন জমিদার এসে সেটা দখল করে বসল। অনেক খোজ করে যোগমায়াদের কাছাকাছি একটা বাসা পাওয়া গেছে। এক সময়ে ছিল গোয়ালার কি মালীর ঘর,—