পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

e রবীন্দ্র-রচনাবলী برای কোথায় কোন শক্ৰ আসিবার সম্ভাবনা আছে ইংরেজ সে ছিদ্র যত্বপূর্বক রোধ করে, যেখানে যত পথঘাট আছে সর্বত্রই পাহারা বসাইয়া রাখে এবং আশঙ্কার অঙ্কুরটি পর্যন্ত পদতলে দলন করিয়া ফেলে, কেবল নিজের স্বভাবের মধ্যে যে একটি, নৈতিক বিঘ্ন আছে সেইটাকে প্রতিদিন প্রশ্রয় দিয়া দুর্দম করিয়া তুলিতেছে— কখনো কখনো অল্পস্বল্প আক্ষেপ করিয়াও থাকে—কিন্তু মমতাবশত কিছুতেই তাহার গায়ে হাত তুলিতে পারে না । ঠিক যেন এক জন লোক বুট পায়ে দিয়া আপনার শস্তক্ষেত্রময় হই হই করিয়া বেড়াইতেছে পাছে পাধিতে শস্তের একটি কণামাত্ৰ খাইয়া যায়। পাধি পলাইতেছে বটে কিন্তু কঠিন বুটের তলায় অনেকটা ছারধার হইয়া যাইতেছে তাহার কোনো খেয়াল নাই। আমাদের কোনো শত্রুর উপদ্রব নাই, বিপদের আশঙ্কা নাই, কেবল বুকের উপরে অকস্মাং সেই বুটটা আসিয়া পড়ে। তাহাতে আমরা বেদন পাই এবং সেই বুটওআলার যে কোনো লোকসান হয় না তাহা নহে। কিন্তু ইংরেজ সর্বত্রই ইংরেজ, কোথাও সে আপনার বুটজোড়াটা খুলিয়া আসিতে রাজি নহে । আয়লণ্ডের সহিত ইংরেজের যে-সমস্ত পিটিমিটি বাধিয়াছে সে-সকল কথা আমাদের পাড়িবার আবশ্যক নাই ; অধীন ভারতবর্ষেও দেখা যাইতেছে ইংরেজের সহিত ইংরেজিশিক্ষিতদের ক্রমশই একটি অ-বনিবনাও হইয়া আসিতেছে । তিলমাত্র অবসর পাইলে কেহ কাহাকেও ছাড়িতে চায় না । ইটটির পরিবর্তে পাটকেলটি চলিতেছেই । আমরা যে, সকল জায়গায় সুবিচারপূর্বক পাটকেল নিক্ষেপ করি তাহা নহে, অধিকাংশ স্থলে অন্ধকারেই ঢেলা মারি । আমাদের কাগজে পত্রে অনেক সময় আমরা অন্যায় খিটমিট করিয়া থাকি এবং অমূলক কোন্দল উত্থাপন করি, সে-কথা অস্বীকার করা যায় না | #f কিন্তু সেগুলিকে স্বতন্ত্রভাবে বিচার করিবার আবস্তক নাই। তাহার কোনোটা সত্য কোনোটা মিথ্যা, কোনোটা ন্যায় কোনোটা অন্যায় হইতে পারে ; আসল বিচার্য বিষয় এই যে, আজকাল এইরূপ পাটকেল ছুড়িবার প্রবৃত্তিটা এত প্রবল হইয়া উঠিতেছে কেন ? শাসনকর্তা খবরের কাগজের কোনো একটা প্রবন্ধবিশেষকে মিথ্যা সাব্যস্ত করিয়া সম্পাদককে এবং হতভাগ্য মুদ্রাকরকে পর্যন্ত জেলে দিতে পারে কিন্তু প্রতিদিনই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পথে এই যে-সমস্ত ছোটো ছোটাে কাটগাছগুলি গজাইয়া উঠিতেছে তাহার বিশেষ কী প্রতিকার করা হইল ? இ