পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| '** ** রাজা প্রজ * రిఎనె হইলেই আমাদের এমনি পরিপূর্ণ পরিতৃপ্তি বোধ হয় যে, তাহার পরেই প্রকৃতিটা নিজলয় হইয় আসে , ধৈৰ্বসাধ্য শ্রমসাধ্য নিষ্ঠাসাধ্য কাজে হাত দিতে আর তেম গী লীগে না । , & * -এই দুৰ্বল অপরিণত শতজীর্ণ চরিত্রটা লইয়া আমরা কী সাহসে বাহিরে আসিয়া দাড়াইয়াছি তাহাই বিস্ময় এবং ভাবনার বিষয়। এরূপ অবস্থায় অসম্পূর্ণতা সংশোধন না করিয়া অসম্পূর্ণতা গোপন করিতেই ইচ্ছা যায়। একটা কোনো আত্মদোষের সমালোচনা করিতে গেলেই সকলে মিলিয়া মুখ চাপিয়া ধরে, বলে, আরে চুপ চুপ, ইংরেজেরা শুনিতে পাইবে—তাহার কা মনে করিবে ? আবার আমাদের দুর্ভাগ্যক্রমে ইংরেজও অনেকগুলি বিষয়ে কিছু স্থলদৃষ্টি । ভারতবৰ্ষীয়ের মধ্যে যে বিশেষ গুণগুলি আছে এবং ধেগুলি বিশেষ সমাদরের যোগ্য তাহ তাহার তলাইয়া গ্রহণ করিতে পারে না ; অবজ্ঞাভরেই হউক বা যে-কারণেই হউক তাহারা বিদেশী আবরণ ভেদ করিতে পারে না বা চাহে না । তাহার একটা দৃষ্টান্ত দেখো—বিদেশে থাকিয় জর্মান যেমন একাগ্রতার সহিত আমাদের সংস্কৃত শাস্ত্রের অনুশীলন করিয়াছে স্বক্ষেত্রে উপস্থিত থাকিয় ইংরেজ তেমন করে নাই । ইংরেজ ভারতবর্ষে জীবনযাপন করে এবং দেশটাকে সম্পূর্ণ ই দখল করিয়াছে কিন্তু দেশী ভাষাট দপল করিতে পারে নাই । অতএব ইংরেজ ভারতবর্ষীয়কে ঠিক ভারতবর্ষীয়ভাবে বুঝিতে এবং শ্রদ্ধা করিতে অক্ষম । এইজন্য আমরা অগত্যা ইংরেজকে ইংরেজি ভাবেই মুগ্ধ করিতে চেষ্টা করিতেছি। মনে যাহা জানি মুখে তাহ বলি না, কাজে যাহা করি কাগজে তাহ বাড়াইয়া লিখি । জানি যে, ইংরেজ পীপল নামক একটা পদার্থকে জুজুর মতো দেখে, আমরাও সেইজন্ত কোনোমতে পাচজনকে জড়ো করিয়া পীপল সাজিয়া গলা গম্ভীর করিয়া ইংরেজকে ভয় দেখাই । পরম্পরকে বলি, কী করিব ভাই, এমন না করিলে উহারা যদি কোনো কথায় কৰ্ণপাত না করে তবে কী করা যায়। উহার কেবল নিজের দম্বরটাই বোঝে। এইরূপে ইংরেজের স্বভাবগুণেই আমাদিগকে ইংরেজের মতো ভান করিয়া আড়ম্বর করিয়া তাহাজের নিকট সন্মান এবং কাজ আদায় করিতে হয়। কিন্তু তবু আমি বলি, সর্বাপেক্ষ ভালো কথা এই যে, আমরা সাজিতে পারিব না। না সাজিলে কর্তারা যদি আমাদিগকে একটুখানি অধিকার বা আধটুকরা অনুগ্রহ না দেন তে৷ নাই দিলেন । । *#