পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

चह्नत রাজা প্রজা 曼 8Հ> মুসলমানের ছন্দ্বে শাস্তপ্রকৃতি, ঐক্যবদ্ধনহীন, আইন ও বেআইনসহিষ্ণু হিন্দুকে দমন করিয়া দিলে মীমাংসাটা সহজে হয়। আমরা বলি না যে, গবর্মেন্টের এইরূপ পলিসি, কিন্তু কাৰ্যবিধি স্বভাবত, এমন কি অজ্ঞানত, এই পথ অবলম্বন করিতে পারে। যেমন, নদীশ্ৰোত কঠিন মুভিকাকে পাশ কাটাইয়া স্বতই কোমল মৃত্তিকাকে খনন করিয়া চলিয়া যায়। . து অতএব, হাজার গবর্মেন্টের দোহাই পাড়িতে থাকিলেও গবর্মেন্ট যে ইহার প্রতিকার করিতে পারেন এ-কথা আমরা বিশ্বাস করি না । আমরা কনগ্রেসে যোগ দিয়াছি, বিলাতে আন্দোলন করিতেছি, অমৃতবাজারে প্রবন্ধ লিখিতেছি, ভারতবর্ষের উচ্চ হইতে নিম্নতন ইংরেজ কর্মচারীদের কার্য স্বাধীনভাবে সমালোচনা করিতেছি, অনেক সময় তাহাদিগকে অপদস্থ করিতে কৃতকার্য হইতেছি এবং ইংলণ্ডবাসী অপক্ষপাতী ইংরেজের সহায়তা লইয়া ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনেক রাজবিধি সংশোধন করিতেও সক্ষম হইয়াছি—এই সকল ব্যবহারে ইংরেজ এতদূর পর্যন্ত জালাতন হইয়া উঠিয়াছে যে, ভারত-রাজতন্ত্রের বড়ে বড়ে ভূধর-শিখর হইতেও রাজনীতি সন্মত মৌন ভেদ করিয়া মাঝে মাঝে আগ্নেয়ন্ত্রাব উচ্ছসিত হইয়া উঠিতেছে। অপর পক্ষে, মুসলমানগণ রাজভক্তিভরে অবনতপ্রায় হইয়া কনগ্রেসের উন্ধেগুপথে বাধাস্বরূপ হইয়া দাড়াইয়াছেন । এই সকল কারণে ইংরেজের মনে একটা বিকার উপস্থিত হইয়াছে—-গবর্মেন্টের ইহাতে কোনো হাত নাই । কেবল ইহাই নহে । কনগ্রেস অপেক্ষ গোরক্ষণী সভাটাতে ইংরেজের মনে অধিক আন্দোলন উপস্থিত করিয়াছিল। তাহারা জানেন ইতিহাসের প্রারম্ভকাল হইতে যে-হিন্দুজাতি আত্মরক্ষার জন্য কখনো একত্র হইতে পারে নাই, চাই কি গোরক্ষার জন্য সে-জাতি একত্র হইতেও পারে। অতএব, সেই স্থত্রে যখন হিন্দুমুসলমানের বিরোধ আরম্ভ হইল তখন স্বভাবতই মুসলমানের প্রতিই ইংরেজের দরদ বাড়িয়া গিয়াছিল। তখন উপস্থিত ক্ষেত্রে কোন পক্ষ অধিক অপরাধী, অথবা উভয় পক্ষ নৃানাধিক অপরাধী কি না তাহা অবিচলিতচিত্তে অপক্ষপাতসহকারে বিচার করিবার ক্ষমতা অতি অল্প ইংরেজের ছিল। তখন র্তাহারা ভাতচিত্তে একটা রাজনৈতিক সংকট কিরূপে নিবারণ হইতে পারে সেইদিকেই অধিক মনোযোগ দিয়াছিলেন। তৃতীয় খণ্ড সাধনায় “ইংরেজের আতঙ্ক” নামক প্রবন্ধে আমরা সাওতাল-দমনের উদাহরণ দিয়া দেখাইয়াছি, ভয় পাইলে সুবিচার করিবার ধৈর্ষ থাকে না এবং যাহারা জানত অথবা অজ্ঞানত ভীতির কারণ, তাহদের প্রতি একটা নিষ্ঠুর হিংস্র ভাবের উদয় হয়। এই কারণে, গবর্মেন্ট নামক যন্ত্রটি যেমনই নিরপেক্ষ থাক গৰমেন্টের