পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्राख्छ| Cछ| 89°ව් নির্তয়ে নিঃসংকোচে বিশ্বসমাজের মধ্যে মাথা তুলিতে পারিব না। সেই নিৰ্ভীক নির্বাধ বিপুল মছুক্ষত্বের অধিকারী হুইবার জন্যই আমাদিগকে পরস্পরের সঙ্গে পরম্পরকে ধর্মের বন্ধনে বঁাধিতে হুইবে । ইহা ছাড়া মানুষ কোনোমতেই বড়ো হইতে পারে না, কোনোমতেই সত্য হইতে পারে না। ভারতবর্ষে যে-কেহ আছে যে-কেহ আসিয়াছে, সকলকে লইয়াই আমরা সম্পূর্ণ হইব-ভারতবর্ষে বিশ্বমানবের একটি প্রকাগু সমস্তার মীমাংসা হইবে । সে-সমস্ত এই যে, পৃথিবীতে মানুষ বর্ণে ভাষায় স্বভাবে আচরণে ধর্মে বিচিত্র—নরদেবতা এই বিচিত্রকে লইয়াই বিরাট—সেই বিচিত্রকে আমরা এই ভারতবর্ষের মন্দিরে একাজ করিয়া দেখিব। পার্থক্যকে নির্বাসিত বা বিলুপ্ত করিয়া নছে কিন্তু সর্বত্র জন্ধের উদ্ভাৱ উপলব্ধি দ্বারা ; মানবের প্রতি সর্বসহিষ্ণু পরমপ্রেমের দ্বারা ; উচ্চনীচ আত্মীয়পর সকলের সেবাতেই ভগবানের সেবা স্বীকার করিয়া । আর কিছু নহুে গুজচেষ্টার দ্বারা দেশকে জয় করিয়া লও— যাহার তোমাকে সন্দেহ করে তাহাদের সন্দেহকে জয় করে, যাহারা তোমার প্রতি বিদ্বেষ করে তাহাদের বিদ্বেযকে পরাস্ত করে। রুদ্ধ দ্বারে আঘাত করে, বারংবার আঘাত করো—কোনো নৈরাস্তে কোনো আত্মাভিমানের ক্ষুন্নতায় ফিরিয়া যাইয়ে না ; মাচষের হৃদয় মাযের হৃদয়কে চিরদিন কখনোই প্রত্যাখ্যান করিতে পারে না । ভারতবর্ষের আহবান আমাদের অন্ত:করণকে স্পর্শ করিয়াছে। সেই আহবান ষে সংবাদপত্রের ক্রুদ্ধ গর্জনের মধ্যেই ধ্বনিত হইয়াছে বা হিংস্র উত্তেজনার মূগরতার মধ্যেই তাহার যথার্থ প্রকাশ এ-কথা আমরা স্বীকার করিব না কিন্তু সেই আহবান যে আমাদের অস্তুরায়াকে উজবোধিত করিতেছে তাহ তখনই বুঝিতে পারি যখন দেপি আমরা জাতিবর্ণ-নির্বিচারে দুর্ভিক্ষকাতরের দ্বারে অন্নপাত্র বহন করিয়া লইয়া চলিয়াছি, যখন দেখি ভদ্রাভদ্র বিচার না করিয়া প্রবাসে সমাগত যাত্রীদের সহায়তার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর হইয়াছি, যখন দেখি রাজপুরুষদের নির্মম সন্দেহ ও প্রতিকূলতার মুখেও অত্যাচারপ্রতিরোধের প্রয়োজনকালে আমাদের যুবকদিগকে কোনো বিপদের সম্ভাবনা বাধা দিতেছে না । সেবায় আমাদের সংকোচ নাই, কর্তব্যে আমাদের ভয় ঘুচিয়া গিয়াছে, পরের সহায়তায় আমরা উচ্চনীচের বিচার বিশ্বত হইয়াছি, এই যে সুলক্ষণ দেখা দিয়াছে ইহা হইতে বুঝিয়াছি, এবার আমাদের উপরে যে-আহ্বান আসিয়াছে তাহাতে সমস্ত সংকীর্ণতার অন্তরাল হইতে আমাদিগকে বাহিরে আনিবে—ভারতবর্ষে এবার মানুষের দিকে মানুষের টান পড়িয়াছে। এবারে, যেখানে যাহার কোনো অভাব তাহ পূরণ করিবার জন্ত আমাদিগকে যাইতে হুইবে —অল্প স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিতরণের জন্য আমাদিগকে নিভৃত পীর প্রান্ডে নিজের জীবন উৎসর্গ করিতে হইবে ; আমাদিগকে