পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 রবীন্দ্র-রচনাবলী দুর্গম দুঃসহ মৌন,—জটাপুঞ্জ তুষারসংঘাত নিঃশব্দে গ্রহণ করে উদয়াস্ত রবিরশ্মিপাত পূজাস্বর্ণপদ্মদল। কঠিন প্রস্তরকলেবর মহান-দরিদ্র, রিক্ত, আভরণহীন দিগম্বর। হেরো তারে অঙ্গে অঙ্গে এ কী লীলা করেছে বেষ্টন— মৌনেরে ঘিরিছে গান, স্তৰূেরে করেছে আলিঙ্গন সফেন চঞ্চল নৃত্য, রিক্ত কঠিনেরে ওই চুমে কোমল শু্যামলশোভা নিত্যনব পল্পবে কুসুমে ছায়ারৌদ্রে মেঘের পেলায় । গিরিশেরে রয়েছেন ঘিরি পার্বতী মাধুরীচ্ছবি তব শৈলগৃহে হিমগিরি। २59 ভারতসমুদ্র তার বাম্পোচ্ছাস নিশ্বসে গগনে আলোক করিয়া পান, উদাস দক্ষিণ-সমীরণে, অনির্বচনীয় যেন আনন্দের অব্যক্ত আবেগ । উর্ধ্ববাহু হিমাচল, তুমি সেই উদ্বাহিত মেঘ শিখরে শিপরে তব ছায়াচ্ছন্ন গুহায় গুহায় রাগিছ নিরুদ্ধ করি,—পুনর্বার উন্মুক্ত ধারায় নূতন আনন্দ-স্রোতে নব প্রাণে ফিরাইয়া দিতে অসীম-জিজ্ঞাসারত সেই মহাসমুদ্রের চিতে । সেইমতো ভারতের হৃদয়সমুদ্র এতকাল করিয়াছে উচ্চারণ উর্ধ্বপানে যে বাণী বিশাল,— অনস্তের জ্যোতিম্পর্শে অনস্তেরে যা দিয়েছে ফিরে— রেখেছ সঞ্চয় করি, হে হিমাদ্রি, তুমি স্তৰূশিরে । তব মৌন শৃঙ্গমাঝে তাই আমি ফিরি অন্বেষণে ভারতের পরিচয় শাস্ত-শিল-অদ্বৈতের সনে ।