পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@२२ রবীন্দ্র-রচনাবলী দ্বারা স্বজাতিকে সিদ্ধির পথে উত্তীর্ণ করিয়া দিয়াছেন, তাহাদিগকেই আজ আমাদের মনশ্চক্ষুর সম্মুখে রাখিয়া প্রণাম করিব, তাহ হইলেই অদ্য যে-মহাসভায় সমগ্র বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা আপন সফলতার জন্য দেশের লোকের মুখের দিকে চাহিয়াছে তাহার কর্ম যথার্থভাবে সম্পন্ন হইতে পারিবে । নতুবা সামান্ত কথাটুকুর কলহে আত্মবিশ্বত হইতে কতক্ষণ ? নহিলে ব্যক্তিগত বিদ্বেষ হয়তো উদ্দেশ্বের পথে কাটা দিয়া উঠিবে এবং দলের অভিমানকেই কোনোমতে জয়ী করাকে স্বদেশের জয় বলিয়া ভুল করিয়া বসিব । আমরা এক-এক কালের লোক কালের অবসানের সঙ্গে সঙ্গে কোথায় নিশ্রশস্ত হইয়া চলিয়া যাইব—কোথায় থাকিবে আমাদের ষত ক্ষুদ্রতা মান-অভিমান তর্কবিতর্ক বিরোধ—কিন্তু বিধাতার নিগৃঢ় চালনায় আমাদের জীবনের কর্ম নিশ্চয়ই ধীরে ধীরে স্তরে-স্তরে আকৃতি দান করিয়া আমাদের দেশকে উপরের দিকে গড়িয়া তুলিবে । অদ্যকার দীনতার শ্ৰীহীনতার মধ্য দিয়৷ সেই মেঘবিমুক্ত সমুজ্জল ভবিষ্যতের অভু্যদয়কে এইখানেই আমাদের সম্মুপে প্রত্যক্ষ করে। যেদিন আমাদের পৌত্রগণ সগৌরবে বলিতে পারিবে, এ-সমস্তই আমাদের, এ-সমস্তই আমরা গড়িয়াছি। আমাদের মাঠকে আমরা উর্বর করিয়াছি, জলাশয়কে নির্মল করিয়াছি, বায়ুকে নিরাময় করিয়াছি, বিদ্যাকে বিস্তৃত করিয়াছি ও চিত্তকে নির্ভীক করিয়াছি। বলিতে পারিবে আমাদের এই পরম সুন্দর দেশ–এই সুজলা সুফল। মলয়জশীতলা মাতৃভূমি, এই জ্ঞানে ধর্মে কর্মে প্রতিষ্ঠিত বীর্ষে বিধৃত জাতীয় সমাজ এ আমাদেরই কীর্তি—যেদিকে চাহিয়া দেপি সমস্তই আমাদের চিস্তা, চেষ্টা ও প্রাণের দ্বারা পরিপূর্ণ, আনন্দগানে মুখরিত এবং নূতন নূতন আশাপথের যাত্রীদের অক্লান্ত পদভারে কম্পমান । > ○>8 সদুপায় বরিশালের কোনো এক স্থান হইতে বিশ্বস্তস্থত্রে খবর পাইলাম যে, যদিও আজকাল করকচ লবণ বিলাতি লবণের চেয়ে সস্ত হইয়াছে তবু আমাদের সংবাদদাতার পরিচিত মুসলমানগণ অধিক দাম দিয়াও বিলাতি লবণ পাইতেছে । তিনি বলেন যে, সেখানকার মুসলমানগণ আজকাল সুবিধা বিচার করিয়া বিলাতি কাপড় বা লবণ ব্যবহার করে না । তাহারা নিতান্তই জেদ করিয়া করে । it i অনেক স্থলে নমপূদ্রদের মধ্যেও এইরূপ ঘটনার সংবাদ পাওয়া যাইতেছে।