পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○○ど。 রবীন্দ্র-রচনাবলী অনাবশুক । গ্রিফিন যখন সেই অশিষ্টতা অবলম্বন করিয়াছেন তখন আমরা তাহ হইতে কেবল কৌতুক লাভ করিবার চেষ্টা করিয়া তাহার অনুকরণে ক্ষাস্ত হইব। গালমন্দ বাদ দিয়া সমস্ত প্রবন্ধে গ্রিফিন সাহেবের একমাত্র কথা এই যে, বাঙালি দুর্বল অতএব রাজ্যতন্ত্রে বাঙালির কোনো স্থান থাকিতে পারে না । কিন্তু ইতিমধ্যে অনেক বাঙালি জিলা শাসনের ভার পাইয়াছে এবং অনেক বাঙালি মন্ত্ৰী-আসনও অধিকার করিয়াছে, যদি তাহাদের কোনো অযোগ্যতা আবিষ্কৃত হইয়া থাকে তবে প্রবন্ধে তাহার প্রমাণ দিলে তাহার যুক্তি পাকা হইত। ঘরে বসিয়া অনেক মূলতত্ত্ব গড়া যায়, কিন্তু সত্যের সঙ্গে যখন তাহার অনৈক্য হয় তখন স্বরচিত হইলেও তাহাকে বিসর্জন দেওয়া কর্তব্য । আমি একটা তত্ত্ব বাধিয়াছিলাম যে, ইংরেজ পুরুষের লেখায় যদি বা কোনো কারণে উদারতার অভাব লক্ষিত হয় তথাপি তাহার মধ্যে একটা সংযত আত্মমর্যাদা থাকে ; কারণ যে-লোক সৌভাগ্যবান এবং ক্ষমতাবান তাহার লেখার মধ্যে একটি বিনয় এবং সেই বিনয়ের মধ্যেই একটি প্রবল পৌরুষ থাকে-আমাদের মতে যাহারা দুর্ভাগ্য, যাহাদের মুখ ছাড়া আর কিছু নাই সময়ে সময়ে অক্ষম আক্রোশে তাহার অমিতভাষী হইয়া আপনার নিরুপায় দৌর্বল্যেরই পরিচয় দেয়। কিন্তু গ্রিফিনের লেখা ইংরেজি বড়ো কাগজে বাহির হইয়া থাকে এবং সেই সঙ্গে আমার প্রিয়তত্ত্বটিকে বিসর্জন দিতে হয় । গ্রিফিন বাঙালিকে রাজনৈতিক অধিকার হইতে বঞ্চিত করিবার পূর্বে নিজেদের পার্লামেণ্টে একট। নূতন নিয়ম প্রচার করিবার চেষ্টা করিবেন । এবার হইতে বক্তৃতামঞ্চে বাগযুদ্ধে পালামেন্টের মেম্বর নির্বাচিত না হইয়া মল্লভূমে স্বশ্বযুদ্ধে সভ্য স্থির হইবে । তাহা হইলে ইংরেজ মন্ত্রী-সভায় কেবল বীরমণ্ডলীই অধিকার লাভ করিবে এবং যাহারা শুদ্ধমাত্র কলম চালাইতে জানে তাহারা ফর্টনাইটলি রিভিয়ুতে অত্যন্ত ঝগড়াটে সুরে প্রবন্ধ লিখিবে । > S ??