পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q পরিশিষ্ট Q 86. ভিন্নজাতীয় জীবসকলের প্রতি প্রয়োগ করিতে গেলে কুইন্সটোচিত বাতুলতার পরিচয় দেওয়া হয় কিনা, তাহাতে দ্বীপবাসী সভ্যজাতির বোধশক্তির সংকীর্ণতা এবং অনভিজ্ঞতা প্রকাশ পায় কিনা এবং সম্ভবত তাহাতে ভিন্নজাতীয় জীবের অনিষ্ট হয় কিনা । "হার্বার্ট স্পেন্সর প্রভৃতি ইংরেজ দার্শনিকের মত এই যে, সভ্যতার তারতম্য অনুসারে নৈতিক আদর্শের তারতম্য কেবল যে অবশ্যম্ভাবী তাহী নহে, অভিব্যক্তির নিয়মে তাহ অবিশুক । এই সকল মতের সত্যাসত্য অন্ত সময় বিচার হইবে আপাতত এইটুকু বলিতে পারি ইহার ফল আমাদের পক্ষে বড়ো পীড়াজনক । বেহার প্রদেশে গাছে ছাপ হইতে বিদ্রোহের আশঙ্কা করিয়া অনেক ইংরেজি কাগজে এমন কথা বলা হুঁইয়াছে যে, প্রাচ্য ও প্রতীচ্য জাতির মধ্যে কোনোকালেই যথার্থ প্রেমের সম্মিলন সম্ভব নহে। উহাদিগকে কেবলমাত্র গায়ের জোরে ভয় দেখাইয়া বশে রাধিতে হইবে । এ-সকল কথা পূর্বাপেক্ষ আজকাল যেন অধিকতর মুক্তকণ্ঠে বলা হইতেছে । আমাদের বক্তব্য এই, যদি বা স্বীকার করা যায় যে স্বাধীনতাপ্রিয় যুরোপের কর্তব্যনীতি চিরপরাধীন প্রাচ্যদেশে সৰ্বথা উপযোগী নহে তথাপি যখন আমাদের রাজা যুরোপীয় তখন প্রাচ্যদেশের স্বাভাবিক গতিকে অব্যাহত রাখিবার চেষ্টা করা তাহাদের পক্ষে দুরাশামাত্র। আমাদের দেশ যদি স্বাধীন হইত তবে এই প্রাচ্যদেশে স্বাভাবিক নিয়মে যে-রাজ্যতন্ত্র উদভাবিত হইয়া উঠিত তাহ বর্তমান ইংরেজ-রাজ্যতন্ত্র হইতে নিশ্চয়ই অনেক বিষয়ে ভিন্ন প্রকারের হইত। হয়তো একদিক হইতে দেখিতে গেলে রাজার যথেচ্ছ প্রতাপ এখনকার অপেক্ষা অধিক মনে হইত, তেমনি আবার অন্তদিকে রাজার প্রতাপ খর্ব করিয়া প্রজাদের ইচ্ছাচালনার পথ ভিন্ন আকারে নানা উপায়ে প্রকাশ পাইত। স্বাভাবিক সামঞ্জস্য কেবল স্বাভাবিক নিয়মেই সর্বাঙ্গসম্পূর্ণরূপে অভিব্যক্ত হইয় উঠে । ইংরেজ হাজার ইচ্ছা করিলেও কেবল পলিসির দ্বারা তাহা ঘটাইতে পারে না । অতএব ইংরেজ আমাদের সহিত কেবল ইংরেজের মতোই ব্যবহার করিতে পারেন ; যদি ইচ্ছাপূর্বক তাহ বিকৃত করেন তবে সে কেবল দুর্ব্যবহার হইবে কোনোকালেই ভারতবর্ষীয় ব্যবহারে পরিণত হইতে পরিবে না। র্তাহাদের নিজের আদর্শ র্তাহার ভাঙিতে পারেন কিন্তু তাহার স্থলে গড়িবেন কী এবং গড়িবেন কী করিয়া ? মাঝে হইতে চিরাভ্যন্ত স্বদেশীয় আদর্শচু্যত ইংরেজ আমাদের পক্ষে বড়ো একটি ভয়ংকর প্রাণী হইয়া দাড়াইবার সম্ভাবন । রাডইয়ার্ড কিপলিং প্রভৃতি লেখকের লেখার মধ্যে যে একটি বলদপমিশ্রিত নিষ্ঠুরতার আভাস অনুভব করা যায় তাহ হইতে মনে হয় মানব মধ্যে মধ্যে بية طه حسب ما لا