পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

輸 পরিশিষ্ট )? פף এমন কি, কেহ হয়তো কনগ্রেসের উপাধিহীন প্রতিনিধি। ইংলণ্ডীয় সমাজে যাহার উপরকার দশজন বালয় বিখ্যাত নিচেকার শিলক্ষের সহিত র্তাহাদের ব্যবধান দুৰ্গম—এই জন্য সেই দশলক্ষের ভক্তি সেই রহস্তাবৃত দশজনার দিকে ধাবিত হইতে "থাকে। আমাদের দেশে গবর্মেন্টের খেতাব শেলক্ষের সমিধান হইতে সেই দশজনকে কাটাগাছের মতো বেড়িয়া রাখিতে পারে নাই । বৈবাহিক মহাশয়ের আভিজাত্যের বৃহ চারিদিক হইতেই ভেদ করিয়া দেন। আবার রাজা-রায়বাহাদুরবংশের শাখাপ্রশাখা আত্মীয়কুটুম্ব ভাগিনেয়-ভ্রাতু-পুত্র খুড়তুত-মাসতুত ভাইরা মিলিয়া উক্ত বংশকে বংশমর্যাদার বহুদূর বাহিরে ব্যাপ্ত বিক্ষিপ্ত করিয়া দেয়। বটের উচ্চশাখা যেমন তাহার নিম্নগামী অসংখ্য কোরাকে বাড়িয়া ফেলিতে পারে না, যতই অদ্ভূত এবং যতই গুরুতর হউক তাহাদিগকে রাত্রিদিন ঘনিষ্ঠভাবে বহন করিতে থাকে তেমনি আমাদের দেশে নিম্নগামী দূরতম এবং দীনতম কুটুম্বস্বজনকেও ত্যাগ করিবার জো নাই –যদি বা তাহাদিগকে অল্প হইতে বঞ্চিত করা যায় তথাপি সর্বপ্রকার ক্রিয়াকর্মে লৌকিকাচারে তাহাদের স্পর্শক্রামকতা হইতে আপন আভিজাত্যকে বঁাচাইয়া চলিবার কোনো উপায় নাই। এইরূপে উচ্চ পদবী বাহিরকে ভিতর হইতে এবং ভিতরকে বাহির হইতে ঠেকাইয়া রাখিতে পারে না । সাধারণ এবং অসাধারণের মাঝখানে মায়াগত্তি কিছুতেই টিকে না । আমাদের দেশে কঠিন জাতিভেদ যেমন একদিকে ভিন্ন বর্ণের মধ্যে অলঙ্ঘ্য সামাজিক ব্যবধান স্থাপন করিয়াছে তেমনি অন্যদিকে ধনী দরিত্র, উচ্চ নীচ, রাজটিকলাঞ্ছিত ও খেতাববঞ্চিতদিগকে সমান করিয়া রাখিয়াছে । প্রাচীন বংশের একটা মোহ আছে বটে। কিন্তু বর্তমান ধনী জমিদারদের মধ্যে নাটোর প্রভৃতি দুই-এক ঘর ছাড়া প্রাচীন বংশ নাই বলিলেই হয়। আমাদের দেশে যেরূপ সম্পত্তিবিভাগ তাহাতে ধনগৌরবকে প্রাচীন করিয়া তোলা একপ্রকার অসাধ্য ; দায়ভাগের শতন্ত্ৰীপ্ৰহারে সে দেখিতে দেখিতে শতধা বিভক্ত হইয়া অকালে পঞ্চস্তু এমন কি, পঞ্চাধিকত্ব প্রাপ্ত হয়। এই তো গেল গৌরবের কথা। কিন্তু আমাদের দেশে ধনের গৌরব অস্থাপি যথেষ্ট জাগে নাই বটে তবু তাহার প্রয়োজন ঘখেই আছে এ-কথা অস্বীকার করা যায় না। অতএব ধাহাদের হাতে ধন আছে তাহার প্রয়োজনসাধন করিয়া সাধারণের আনুগত্য আকর্ষণ করিতে পারেন । র্তাহাদের পক্ষে নেতা হইবার সেই একটা সোনার রাস্তা আছে। কিন্তু আমাদের অভিজাতগণ যাহাকে রাজপথ জ্ঞান করেন তাহ রাজা হইবার পথ —অদ্য পথের শেষে দেশের কল্যাণ ও সাধারণের হৃদয় থাকিতে পারে কিন্তু