পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

鬱》 পরিশিষ্ট Abණ්ථ অপরপক্ষের কথা ভাত্রমাসের ভারতীতে "মুখুজ্যে বনাম বাড়ুজ্যে” প্রবন্ধের লেখক বাড়ুজ্যেমশায়দের হইয়া যে ওকালতি করিয়াছেন, তাহ পক্ষপাতবিহীন নহে। ইংরেজ-প্রসাদবুভূক্ষু উপাধিভিক্ষুকদের পক্ষে আমি কোনো কথা বলিতে চাহি না, কিন্তু লেখক অন্তপক্ষীয়দের প্রতি যে-সমস্ত গুণের আরোপ করিয়াছেন তাহার কোনো প্রমাণ দেন নাই। এ-কথা সত্য হইতে পারে এখনকার জমিদারবর্গ রাজপুরুষদের অত্যন্ত “স্তাওটো” হইয়া পড়িয়াছেন, দেশের লোকের দিকে র্তাহারা তাকান না। স্বদেশীয়ের নিকট হইতে খ্যাতিলাভের জন্ত এবং স্বদেশের প্রতি স্বাভাবিক বদান্ততাবশত পুরাকালের জমিদারগণ যে-সকল কীর্তিকলাপ স্থাপন করিতেন, এখনকার জমিদারগণ তাহাতে উৎসাহ বোধ করেন না । কেন করেন না ? পূর্বোক্ত প্রবন্ধে তাহার কতকটা হেতু দেওয়া হইয়াছে। ইংরেজের প্রভাব আমাদের দেশে এত অধিক প্রবল হইয়াছে যে, তাহা সকল প্রভাবকে ছাড়াইয়া উঠিয়াছে। দেশের লোককে আমরা গণ্য জ্ঞান করি না । দেশের লোকের কাছে প্রশংসা পাওয়ার কোনো স্বাদ নাই । মুসলমানদের আমলে আমরা স্বদেশকে তুচ্ছ বোধ করিতাম না। কারণ, বিজেতার আমাদের অপেক্ষ শ্রেষ্ঠ হইলেও আমাদেরও নানা বিষয়ে শ্রেষ্ঠতা ছিল। অন্তত আমাদের উভয়ের মধ্যে গুরুতর পার্থক্য ছিল না । কিন্তু ইংরেজরাজার সঙ্গে আমাদের প্রভেদ সর্ববিষয়ে এত অত্যধিক, তাহাদের বুদ্ধিবল যন্ত্রতন্ত্র বিলাসবিভূতি সর্বদাই আমাদের পক্ষে এত দুরায়ত্ত বলিয়া বোধ হয় যে, অলক্ষিতভাবে আপনাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা হ্রাস হুইয়া আসিয়াছে । ষে অনিবাৰ্ধ শ্রদ্ধার অভাবে ইংরেজ অনেক সময় আমাদের প্রতি সদবিচার করিতে পারে না, সেই শ্রদ্ধার অভাবে স্বদেশের লোকও আমাদের প্রতি বিমুখ হইয়াছে। সেইজন্ত আমাদের দেশের অনেক শিক্ষিত লোক এবং বিলাতফেরতর সাধারণ লোকদের হইতে আপনাদিগকে যেন স্বতন্ত্ৰশ্রেণীভূক্ত করিয়া রাখিতে ভালোবাসেন । বাহু বেশভূষা-আচারব্যবহারেও র্তাহারা আপনাদের পার্থক্য কিছু যেন অস্বাভাবিক আড়ম্বরের সহিত জাহির করিয়া রাখিতে চান । sŘ কতকটা পার্থক্য ষে আপনিই হইয় পড়ে সে-কথা অস্বীকার করিবার জো নাই। ইংরেজি-শিক্ষিত এবং ইংরেজিতে অশিক্ষিত লোকদের মধ্যে যে কেবল শিক্ষার তারতম্য