পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উৎসর্গ 89 আমাদের এই পল্লিপানি পাহাড় দিয়ে ঘেরা, দেবদারুর কুঞ্জে ধেল্প চরায় রাখালের । কোথা হতে চৈত্রমাসে হাসের শ্রেণী উড়ে আসে অভ্রানেতে আকাশপথে যায় যে তারা কোথা আমরা কিছুই জানি নেকে। সেই সুদূরের কথা । আমরা জানি গ্রাম কপানি, চিনি দশটি গিরি, ম। ধরণী রাখেন মোদের কোলের মধ্যে ঘিরি । সে ছিল ঐ বনের ধারে ভুট্টাপেতের পাশে যেখানে ঐ ছায়ার তলে জলটি ঝরে আসে । ঝরনা হতে আনতে বারি জুটত হোথ। অনেক নারী, উঠত কত হাসির ধ্বনি তারি ঘরের স্বারে, সকাল-সাঝে আনাগোনা তারি পথের ধারে । মিশত কুলুকুলুধ্বনি তারি দিনের কাজে, ঐ রাগিণী পথ হারাত তারি ঘুমের মাঝে । সন্ধ্যাবেলায় সন্ন্যাসী এক বিপুল জটা শিরে মেঘে-ঢাক শিপর ই৩ে নেমে এলেন ধীরে । বিস্ময়েতে আমরা সবে শুধাই, “তুমি কে গো হবে ?" বসল যোগী নিরুত্তরে নির্ঝরিণীর কুলে নীরবে সেই ঘরের পানে স্থির নয়ন তুলে । অজানা কোন অমঙ্গলে বক্ষ কাপে ডরে, রাত্রি হল, ফিরে এলেম যে যার আপন ঘরে । পরদিনে প্রভাত হল দেবদারুর বনে, ঝরনাতলায় আনতে বারি জুটল নারীগণে । দুয়ার পোলা দেপে আসি, নাই সে খুশি, নাই সে হাসি, জলশূন্ত কলসখানি গড়ায় গৃহতলে, নিব-নিব প্রদীপটি সেই ঘরের কোণে জলে ।